প্রবল বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হাওড়া, দেরিতে ছাড়ল একাধিক বন্দেভারত
টানা বৃষ্টিতে ধানজমিতে দাঁড়িয়েছে জল খুশি কৃষকরা
দীপিকা অধিকারী, রাজন্যা নিউজ
কলকাতার আকাশে মেঘভাঙা বৃষ্টিতে স্তব্ধ শহর। এই তুমুল বৃষ্টি সাপে বর করেছে গ্রামের কৃষকদের। ধান চাষের জমিতে জল দরকার ছিল। সোমবার রাতের বৃষ্টিতে সেই সমস্যার অনেকটাই সমাধান করেছে। জুলাই মাসে বোনা আমন ধানে আর কিছুদিন পরেই ধানের শীষ আসবার সময়। পর্যাপ্ত জল না থাকলে চাষের ক্ষতি হবার আশঙ্কা থেকে যায়। ফলে বৃষ্টি হয়ে সুবিধাই হয়েছে চাষিদের।
সোমবারের তুমুল একটানা বৃষ্টি সাম্প্রতিক সময়ে দেখেনি শহর কলকাতা ও শহরতলি। ডূবেছে কলকাতা ও হাওড়ার বিস্তীর্ণ এলাকার রাস্তাঘাট। হাওড়া স্টেশনে ট্রেন ঢোকা তো দূর রামরাজাতলা থেকেই ট্রেনের গতি থমকেছে। কাজে বেড়িয়ে নাভিশ্বাস নিত্যযাত্রীদের। একই চিত্র সাঁতরাগাছির আগে গড়ফায়। গড়ফা রেলব্রিজের নিচে জলভর্তি ট্যানেলে আটকা পড়ে একটি লরি। ওই রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ করে দেয় পুলিশ। এতে করে কিছুটা যানজটের সৃষ্টি হয়। তবে ভিন্ন চিত্র গ্রামাঞ্চলে। আমন চাষে ছেয়ে গিয়েছে জমি। কিন্তু সেইভাবে বৃষ্টি না হওয়ার জেরে ধানের গোড়ায় জল নেই। সমস্যার মধ্যেই সোমবার রাতের টানা বৃষ্টি অনেকটাই সুবিধা করে দিয়েছে।
প্রদ্যুত রায়, অষ্টধর দেড়ে-সহ আমতার কৃষকদের কথায়, জেলার চাষিরা বর্ষায় মূলত আমন ধানের চাষের দিকে তাকিয়ে থাকেন। কম খরচে লাভের টাকা বেশি তোলা যায়। জমিতে পর্যাপ্ত জল থাকার কারণে সেচের প্রয়োজন হয় না। সার ও শ্রমিক কম লাগে। তা ছাড়া, রোগ-পোকার আক্রমণ কম থাকায় আমন ধানের তুলনামূলক কম খরচ হয়। খরচ কম হওয়ার কারণে চাষিদের এই ধানই পছন্দ। বাড়তি আয়ের সুবিধা মেলে চাষিদের।
অন্যদিকে, বৃষ্টির জেরে কারশেডে জল থাকায় একের পরে এক লোকাল-দূরপাল্লার ট্রেন বাতিল হয়। হাওড়া থেকে নির্ধারিত সময়ে ছাড়েনি হাওড়া-পুরী এবং হাওড়া-এনজেপি বন্দে ভারত এক্সপ্রেস-সহ একাধিক ট্রেন। লোকাল ট্রেন পরিষেবা একই ভাবে ব্যাহত এই ডিভিশনে। কোনওক্রমে লোকাল ট্রেনকে হাওড়া স্টেশন পর্যন্ত আনার চেষ্টা চালানো হয়। শালিমার স্টেশনে সিগন্যাল সিস্টেমই খারাপ হয় বলে জানা গেছে। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় সিগন্যাল সারানোর কাজ করেন ইঞ্জিনিয়াররা। পূর্ব রেলের পক্ষ থেকে প্রেস বিবৃতিতে জানানো হয় রেল লাইনে জল জমে থাকার কারণে হাওড়া-ধানবাদ ব্ল্যাক ডায়মন্ড এক্সপ্রেস, হাওড়া-রামপুরহাট গণদেবতা এক্সপ্রেস সহ হাওড়া থেকে তিনটি বন্দে ভারত এক্সপ্রেস, হাওড়া- রাচি শতাব্দী এক্সপ্রেস, ডাউন সরাইঘাট এক্সপ্রেস চলাচলের নির্ধারিত সময়ের পরিবর্তন করা হয়।