সাইকেল মিলতেই আক্ষেপ, সেদিন সাইকেল থাকলে ভিন রাজ্যে বাবাকে আনতে চলে যেতাম

কল্যাণ অধিকারী, এডিটর রাজন্যা নিউজ

স্কুলের গেট পেরিয়ে গ্রামের ভিতর যাবার ঢালাই রাস্তা। স্কুল থেকে পাওয়া নীল রঙের চকচকে ‘সবুজ সাথী’ সাইকেল চালিয়ে স্কুল পড়ুয়া ছাত্রী বাড়ির পথে। লকডাউন শুরুর পর থেকেই চিন্তায় ছিল কীভাবে ভিন রাজ্য থেকে ফিরবে বাবা। বিপাকে পড়া পরিবারগুলো তাকিয়ে ছিল সরকারের দিকে। অন্তত একটা সাইকেল থাকলে বাবাকে আনতে ভিন রাজ্যে পাড়ি দিত। সেই মেয়ে এদিন স্কুল থেকে পেল নীল রঙের ‘সবুজ সাথী’ সাইকেল। খুশিতে চোখে জল।

মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মেনে স্কুলে-স্কুলে ‘সবুজ সাথী’ সাইকেল আবারো প্রদান করা হচ্ছে। কোথাও বিধায়ক উপস্থিত থেকে আবার কোথাও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি উপস্থিত। তাঁদের হাত দিয়েই নীল রঙের সাইকেল পাচ্ছে পড়ুয়ারা। ঝিখিরা উচ্চ বিদ্যালয়ে সাইকেল নিতে পড়ুয়াদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আমতার বিধায়ক সুকান্ত পাল। ছিলেন পরিচালন কমিটির কার্যকর্তারা। একি সঙ্গে সবুজ সাথী প্রকল্পের নীল রঙের সাইকেল প্রদান করা হয়েছে খোড়প হাইস্কুল, নওপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়, চিতনান মীরগ্রাম বিড়াল উচ্চ বিদ্যালয় সহ বিভিন্ন স্কুলে। হাসিমুখে সাইকেল নিয়ে বাড়ির পথ ধরছেন পড়ুয়ারা।

পড়ুয়াদের একাংশের কথায়, ‘সাইকেল পেয়ে খুশির অন্ত নেই। এর আগে পাড়ার দাদা-দিদিরা সাইকেল পেয়েছে। এবার সাইকেল পেলাম আমরা। খুশি তো অনেক হচ্ছে। এক পড়ুয়ার কথায়, লকডাউন শুরুর পর পরিজনেরা ভিন রাজ্য থেকে ফিরতে সমস্যায় পড়েছিলেন। তখন সাইকেল থাকলে সাইকেল চালিয়েই বাবাকে আনতে পাড়ি দিতাম। বাড়িতে না ফিরতে পেরে খাদ্য সমস্যায় চরম দুরবস্থার মধ্যে পড়েছিলেন। বাড়িতে সকলে খুব চিন্তায় ছিলাম। আজ সাইকেল পেয়ে বাবাকে চাপিয়ে একপাক গ্রামেই ঘুরব’।

গ্রামবাংলার বড় ভোট পঞ্চায়েত নির্বাচন কার্যত শিয়রে। জেলাগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল সবুজ সাথীর সাইকেল প্রদান করার। কে জানতো সাইকেল হাতে পেয়ে পড়ুয়ার চোখে মুখে লকডাউনের স্মৃতি ঝলসে উঠবে। আমতার বিধায়ক সুকান্ত পাল জানান, “মানবিক মুখ্যমন্ত্রী পড়ুয়াদের পাশে সর্বদা রয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর মস্তিষ্কপ্রসূত কন্যাশ্রী প্রকল্প এর আগে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে। ‘উৎকর্ষ বাংলা’ এবং ‘সবুজ সাথী’ প্রকল্প দু’টি ‘ওয়ার্ল্ড সামিট অন দ্য ইনফর্মেশন সোসাইটি’ পুরস্কার পেয়েছে। পড়ুয়াদের কথা, সাধারণ মানুষের কথা মুখ্যমন্ত্রী প্রতিটি মুহূর্তে ভাবেন। নতুন করে আমতা বিধানসভার বিভিন্ন স্কুলে সাইকেল প্রদান করা হচ্ছে।” 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *