জেঠিমার মৃত্যু ক্যান্সারে এবার নিজের চুল দান করলেন ক্যান্সার আক্রান্তদের জন্য
কল্যাণ অধিকারী, এডিটর রাজন্যা নিউজ
মেয়েদের লম্বা চুল তাদের ব্যক্তিত্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ বলে অনেকেই মনে করেন। গ্রামীণ হাওড়ার দেউলগ্রাম গ্রামের অনিন্দিতারও ছিল লম্বা চুল। কিন্তু ক্যান্সার আক্রান্ত মহিলাদের জন্য চুল দান করতে এগিয়ে এলেন। নিজের চুল দান করেছেন ক্যান্সার আক্রান্ত মহিলাদের পরচুলা বানানোর জন্য।
গ্রামীণ হাওড়ার বাগনান-১ ব্লকের বাকসিহাট গ্রাম পঞ্চায়েতের দেউলগ্রাম গ্রামের বাসিন্দা অনিন্দিতা সামন্ত। ওঁর সেজো জেঠিমা মারণব্যাধি কান্সারে আক্রান্ত ছিলেন। নিজের চোখে দেখেছিলেন ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্য জেঠিমার চুল উঠে গিয়েছিল। চলতি বছরের শুরুতেই জেঠিমা সুমিত্রা সামন্ত মারা যান। তাঁর চিকিৎসা সহ সমস্তটা দেখার পরেই সিদ্ধান্ত নিয়েই নিয়েছিল চুল দান করবেন। অনিন্দিতার কথায়, ‘জেঠিমার কেমোথেরাপির জন্য সমস্ত চুল উঠে গিয়েছিল। একেবারে পুরো মাথা খালি হয়ে গিয়েছিল। মনের জোর হারিয়ে ফেলেছিলেন। ভেঙে পড়েন। জেঠিমার মৃত্যুর ছয় মাসের মধ্যেই নিজের লম্বা চুল কেটে দান করলেন তিনি। এই কাজে ও পাশে পেয়েছে পরিবারকে’।
স্নাতক সম্পূর্ণ করা অনিন্দিতা বর্তমানে কলকাতার একটি সংস্থা থেকে টেকনিক্যাল ট্রেনিং নিচ্ছে। পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘আমরা’র সদস্যা। চুল দানের ইচ্ছে নিয়ে যোগাযোগ করেন মেরিনার্স এরিনা’র সদস্য দেবরাজ আড়ুর সঙ্গে। এরপর পূর্ব মেদিনীপুরের ‘সংকেত’ সংস্থার ঋতুপর্ণা মণ্ডলকে সঙ্গে নিয়ে চুল দান করেন। বুধবার তিনি জানান, ‘গ্রামের দিকে বাস করলেও চোখের সামনে দেখেছি ক্যান্সার আক্রান্তদের কষ্টের বাস্তবটা। চুল তো একদিন না একদিন বড়ো হয়ে যাবে। তবে, আমার পদক্ষেপ ক্যান্সার আক্রান্তদের সাহায্যে লাগুক এটাই চাই’।
নাগরিক সচেতনতা প্রসারে অনিন্দিতার উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন জেলার সুশীল-সমাজের-প্রতিনিধিবৃন্দ। তাঁদের কথায়, ‘ক্যান্সার আক্রান্তদের সাহস জোগাতে শহর হোক বা গ্রাম এভাবেই সকলে এগিয়ে আসুক’।