কালনা ও বহরমপুর জোড়া জনসভা থেকে বিজেপি ও দলত্যাগিদের তীব্র আক্রমণ মমতার
কল্যাণ অধিকারী
হাইলাইটস
❏ লোভির দল টিকিট পাবে না বলেই পালাচ্ছে
❏ আপনারা পুকুরের জল খাবেন, আর ওরা হিমালয়ান ওয়াটার খাবে
❏ বাংলার শাসন বাংলার মানুষ করবে, গুজরাত থেকে করবে না বললেন মুখ্যমন্ত্রী
ভোটের চাকা গড়াতে শুরু করেছে বঙ্গে। দিল্লি থেকে প্রায় প্রতিদিন কোন না কোন বিজেপি নেতা বঙ্গে আসছেন। তৃণমূল কে আক্রমণ শানাচ্ছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে একাই একশো এক মহিলা। পরনে চিরপরিচিত নীল পাড় সাদা শাড়ি। পায়ে হাওয়াই চটি। তাতেই চ্যালেঞ্জ, পাল্টা চ্যালেঞ্জ। এক ইঞ্চি জমি ছাড়া হবে না দিচ্ছেন হুঙ্কার।
মঙ্গলবার বেলায় কালনার জনসভা সেরেই কপ্টারে পৌঁছে যান আর এক জনসভা বহরমপুর। জোড়া জনসভা থেকে বিজেপির বিরুদ্ধে রাজনৈতিক আক্রমণ শানালেন। আবার কখনও ছন্দ মিলিয়ে তোপ দাগলেন। তাঁর রাজ্যে এসে বিজেপির নেতারা পরিবর্তন যাত্রা করছেন। তিনি চুপ করে থাকবেন তা হয় না। কালনার জনসভা থেকে তিনি বলেন, ‘ওঁরা এ রাজ্যের লোক নয়। বহিরাগত ! বাইরে থেকে আসছে। গাড়ি তো নয়, হোটেল। আপনারা পুকুরের জল খাবেন, টিউবওয়েলের জল খাবেন, আর ওরা হিমালয়ান ওয়াটার খাবে। ওঁরা ফাইভ স্টার হোটেল থেকে খাবার এনে খাচ্ছে, আর বলছে, ছবি তুলুন। এরপরেই বলেন, বাংলার শাসন বাংলার মানুষ করবে, গুজরাত থেকে করবে না’।
মমতা যখন কালনার সভা মঞ্চ থেকে ভাষণ দিচ্ছেন ততক্ষণে তারাপীঠে পুজো দিতে পৌঁছে গেছেন জেপি নাড্ডা। বক্তব্যর মাঝেই তাঁর প্রশ্ন আচ্ছা মা-বোনেরা আপনারা বলুন, কৃষকের জমির ধান আমরা কিনছি কি না? আপনারা বিনামূল্যে রেশন পাচ্ছেন কি না? স্বাস্থ্যসাথী কার্ড পাচ্ছেন কি না? লাখো জনতা সমস্বরে জবাব দিচ্ছে হ্যাঁ, হ্যাঁ, হ্যাঁ। আপনারা ওঁদের পাতা ফাঁদে পা দেবেন না। দেখছেন তো আপনারা কেউ কেউ ছেড়ে চলে যাচ্ছে। কারণ তাঁরা বুঝে গেছে আমি টিকিট দেব না। শুধু ওঁরা নিজের পরিবারের কথা ভাববে, ছেলেদের ইংরাজী মিডিয়াম স্কুলে পড়াবে। মনে রাখবেন, রাজনীতিতে তিন ধরণের লোক থাকে। ভোগী, লোভি আর ত্যাগি। তৃণমূল কংগ্রেস করতে হলে ত্যাগী হতে হবে। লোভী হওয়া চলবে না।
এরপরের জনসভা ছিল অধীর চৌধুরীর খাস তালুক বহরমপুর। কালনার জনসভা শেষ হওয়ার পরেও মমতার জন্য লোক মাঠে বসে। জোর হাত করে প্রণাম করে মঞ্চ থেকে নামেন তিনি। কপ্টার ধুলো উড়িয়ে আকাশে উঠতেই হাজারও জনতা তখনও দিদি, দিদি, দিদি। কালনার শেষ করা অংশ থেকে বহরমপুর স্টেডিয়াম মাঠে শুরু করেন তিনি। আক্রমণের লক্ষ্য দলত্যাগিদের। তিনি বলেন, লকডাউনে আমরা ট্রেনের ভাড়া দিয়েছি রাজ্যের মানুষদের ফিরিয়ে আনতে। একটা টাকা কেন্দ্র দেয়নি। আর দেখুন চোর, ডাকাত, দুর্নীতিবাজদের জন্য চাটার্ড প্লেন পাঠিয়ে দিচ্ছে। বাংলার মানুষের রক্ষায় আমি শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাব। এরপরেই মুর্শিদাবাদের জন্য কি কি কাজ করেছেন তাঁর হিসাব দিতে থাকেন।
তিনি আরও বলেন, বুথ কর্মীরা আমার সম্পদ। তাঁরা ত্যাগী। জনতার উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, বাংলার বাইরে একবার ত্রিপুরার দিকে তাকান। ত্রিপুরার মানুষ বুঝতে পারছে বিজেপিকে ভোট দিয়ে কি ভুল করেছে! যারা ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভেঙে দেয়। রবীন্দনাথ ঠাকুরকে নিয়ে ভুল তথ্য বলে। ওঁরা না জানে সভ্যতা, না জানে সংস্কৃতি, না জানে মানবিকতা। তাঁদের পায়ে মাথা নোয়াচ্ছে কেউ কেউ। এরপরেই যুবদের ও মহিলাদের নিয়ে স্লোগান দেন ট্যাব কে দিয়েছে? বিনা পয়সায় রেশন? স্বাস্থ্য সাথী? কন্যাশ্রী কে দিয়েছে সমস্বরে জবাব আসে তৃণমূল। তৃণমূল। তৃণমূল। বক্তব্য শেষ করেন জয় বাংলা। জয় তৃণমূল স্লোগান দিয়ে।