উপনির্বাচনের সাফল্যে জোরালো করে দিল মমতার সিলেবাস

কল্যাণ অধিকারী এডিটর রাজন্যা নিউজ

শনিবার দুপুর হাওড়া জেটি ঘাটে লঞ্চে সওয়ারি ঝাড়খণ্ডের চার যুবক। মোবাইলে ভোটের ফলাফল দেখছে। হেমন্ত সোরেনের ‘প্রত্যাবর্তন’ দেখবে ঝাড়খণ্ড? প্রশ্নের ঝটিতি জবাব “আপকা ইহা দিদি, হামারা উহাপে সোরেন।” অর্থাৎ শীতের ইমেজে ঝাড়খন্ডে হেমন্তের ‘প্রত্যাবর্তন’ দেখছেন। তা বিকেল গড়াতেই স্পষ্ট হয়ে যায়। ঝাড়খন্ডবাসী ভরসা রেখেছে হেমন্ত সোরেন ও তাঁর স্ত্রী কল্পনা সোরেনে। বাংলার ৬টি উপনির্বাচনে মমতাতেই ভরসা রেখেছেন বাংলার মানুষ।

উপনির্বাচনের কয়েক মাস আগে আরজি কর-আন্দোলনের ঢেউ উঠেছিল বঙ্গে। চিকিৎসক ছাত্রীকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনার প্রতিবাদে রাত জেগেছিল শহর ও গ্রামের মানুষজন! অনেকেই মনে করেছিল রাজ্যের শাসক দলের বিপক্ষে ভোট পড়বে। কিন্তু বাংলার ছ’টি বিধানসভার উপনির্বাচনে বিশেষ করে মহিলারা দু’হাত উপুড় করে ভোট দিয়েছে ঘাসফুলে। এতেই বিরোধীদের ‘লোকসান’ হিসেবে দেখছে তৃণমূল। কর্মীদের একাংশের কথায়, আরজি কর-আন্দোলনের সময় যে সমস্ত তৃণমূল নেতা কর্মী চুপ করে বসেছিল তাঁরাও এদিন সবুজ আবীর খেলছে। এটা আমাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জয়। মুখ্যমন্ত্রী বাংলার মহিলাদের জন্য বিবিধ জনমুখী প্রকল্প চালু করেছে। তার অন্যতম ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’। এতে করে রাজ্যের মহিলারা উপকৃত হচ্ছেন। তারপরেও বিরোধীরা অপপ্রচার করে বাংলাকে বদনাম করার চেষ্টা করে গেছে। বামেরা আগেই শূন্যে চলে গিয়েছে। কংগ্রসকেও শেষ করে দিচ্ছে। বিজেপির বাংলার মানুষের ভরসা নেই।

রাজ্যের বিকাশে মমতার ভূয়সী প্রশংসায় ভরাচ্ছে তৃণমূল। অপরদিকে তৃণমূলের অন্য একাংশের কথায়, সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সিলেবাস দলের জন্য কাজ করেছে। কি ছিল সেই সিলেবাস? এ প্রসঙ্গে ওঁদের কথায়, বাংলায় ৬টি বিধানসভা আসনের উপ নির্বাচনে দলকে বড়ো সভা সমাবেশ না করিয়ে বুথে বুথে প্রচার জোরালো করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। তাতেই কেল্লাফতে। তাছাড়া এই উপনির্বাচনে দেখেছেন বাংলার রাজনীতির উন্মাদনা? বিরোধীরা তো হাল ছেড়েই দিয়েছে আগেই। দিল্লি থেকে স্পেশাল বিমানে চেপে হেভিওয়েটরা পর্যন্ত আসেনি।

আলিপুরদুয়ারের মাদারিহাটে এই প্রথমবার ফুটল ঘাসফুল। আরএসপির বেলচা-কোদাল প্রতীকের উপর ভরসা রাখা ভোটাররা বদলে গিয়ে বিজেপিকে আপন করেছিল। এবার তাঁরাই তৃণমূলে ভরসা করতে শুরু করেছেন। প্রায় ২৮ হাজার ভোটে তৃণমূল প্রার্থী জয়প্রকাশ টোপ্পো জয়ী হয়েছেন। উত্তরবঙ্গের আরো এক বিধানসভা সিতাই। উপনির্বাচনে ধুয়েমুছে সাফ হয়ে গেল বিজেপি। পদ্মশিবিরের এমন বিপর্যয় দেখে উল্লসিত তৃণমূল সমর্থকেরা। মেদিনীপুর, তালড্যাংরা, হাড়োয়া, নৈহাটি সর্বত্রই বিপুল জয় এসেছে ঘাসফুলের। শহরের তৃণমূলের একাংশের কথায়, বিরোধী নেতারা অনেকেই তো কাগুজে বাঘ। তাঁরা সন্ধে হলেই টিভি চ্যানেলে বসে পড়েন। কিন্তু বাংলার মাঠে-প্রান্তরে থাকে তৃণমূল কর্মীরা। তাদেরকে সঠিক সিলেবাস দিয়েছেন স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

Pic Collected

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *