মঙ্গলে নবান্ন অভিযান শুভ হল না বিজেপির কাছে, নবান্নের বহু মাইল দূরেই থেমে গেল মিছিল
কল্যাণ অধিকারী
নবান্ন অভিযান সফল করতে চেষ্টার কসুর করেনি বিজেপি। তারপরও হাওড়ার দিক থেকে প্রধান মিছিল সাঁতরাগাছি টপকাতে পারল না। বিরোধী দলনেতা গ্রেফতার হতেই নেতাহিন কর্মীরা ইট-পাটকেল ছুঁড়ে কিছুটা লড়াই দিয়ে কার্যত ধরাশায়ী হলেন। শেষ পর্যন্ত সাঁতরাগাছি থেকেই ঘরমুখি হলেন কর্মী সমর্থকরা।
হাওড়ায় সকাল থেকেই সিটি পুলিশের নজরদারি ছিল কঠোর। সাঁতরাগাছি কোনা এক্সপ্রেসওয়েতে পিচের রাস্তায় গর্ত খুলে পিলার পুতে ব্যারিকেড করা হয়েছিল। তার পিছনে ছিল আরও দুটি পুলিশি বাধা। হাওড়া ময়দান থেকে কাজিপাড়া পর্যন্ত সম্পূর্ণ গাড়ি চলাচল বন্ধ ছিল। ময়দানে রাস্তার ওপর ব্যারিকেড ক্করে শালবল্লা পুঁতে দেয় পুলিশ। এতটা শক্তপোক্ত পুলিশের চতুর্মুখি বাঁধায় কার্যত দিশেহারা বিজেপির কর্মী-সমর্থকরা। ট্রেনে-বাসে করে মিছিল করে নবান্ন যাবার আগেই শুভেন্দুর গ্রেফতারির খবর ছড়িয়ে পড়ে। কর্মীদের মনোবল অনেকটাই নিমিয়ে যায়। গ্রাম থেকে সাঁতরাগাছি পৌঁছাতেই একাধিকবার পুলিশি বাঁধায় থমকেছে বাস। তারপরেও যারা পৌঁছাতে পেরেছে পুলিশের আঁটসাঁট বাঁধা ও নেতা না থাকায় ইটপাটকেল ছুঁড়ে কিছুটা বিক্ষোভ দেখানো ছাড়া কিছুই ছিল না। পরিস্থিতি যা পুলিশের কাঁদানে গ্যাসের সামনে পড়ে চোখের জল নাকের জল কর্মীদের।

হাওড়া ময়দান সহ শহরের বিভিন্ন প্রান্তে সকাল থেকেই নজরদারি চালান হাওড়া সিটি পুলিশ কমিশনার প্রবীন ত্রিপাঠি সহ পুলিশের অন্যান্য আধিকারিকরা। এদিন সিটি পুলিশ ড্রোন ক্যামেরা দিয়ে এলাকা তন্ন তন্ন করে তল্লাশি চালায়। হাওড়ায় ঢোকার ফরসোর রোডে বাস থামিয়ে নজরদারি চালায় সিটি পুলিশ। সকালে হাওড়া স্টেশনে পৌঁছান বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তিনি পুলিশের অতি সক্রিয়তা নিয়ে সাংবাদিকদের জানান, “দিদি ভয় পেয়েছে, ভালো লাগছে।” হাওড়া ময়দান থেকে মিছিল করে যাবার কথা ছিল সুকান্তর। আগত কার্যকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা শেষ করেন। দুপুরে মিছিল শুরুর অনেক আগেই গ্রেফতার হয়েছেন শুভেন্দু ও লকেট। সাংবাদিকদের তাঁর সাফ জবাব ছিল, মিছিল করবেন যতক্ষণ না পর্যন্ত তিনি গ্রেফতার হচ্ছেন। তবে, ময়দান থেকে বেশি দূর যেতে হয়নি আটক হন তিনি। এদিন ময়দানে নবান্ন অভিযানে আহত হন এক বিজেপি কর্মী। তাঁকে নিয়ে আসা হয় হাওড়া জেলা হাসপাতালে।

গ্রামীণ এলাকার বাগনান, উলুবেড়িয়া, আমতা, হাউলিবাগান সর্বত্র পুলিশের কড়া নজরদারি ছিল। বাগনান লাইব্রেরি মোড়ে বাস আটকায় পুলিশ। এরপরেই জাতীয় সড়কে বসে পড়েন বিজেপি কর্মীরা। একি দৃশ্য পাচলার হাউলিবাগানে। সেখানেও পুলিশ গাড়ি আটকালে রানিহাটি-আমতা সড়কে বসে পড়েন কর্মীরা। শ্লোগান দিতে থাকেন। তবে যানবাহন না পেয়ে সাধারণ মানুষ হয়রানির শিকার হন। অনেকেই ছট গাড়ি করে গন্তব্যে পৌঁছেছেন।