৩ থেকে ৫ সেমি ভাঙা টালিতে মনীষী ও স্বাধীনতা সংগ্রামী ছবি ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডসে আমতার সুব্রত
কল্যাণ অধিকারী, এডিটর রাজন্যা নিউজ
ভাঙাচোরা টালি দিয়ে ৩০জন মনীষী এবং স্বাধীনতা সংগ্রামীর ছবি এঁকে ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডসে জায়গা করে নিলেন আমতার ছোট মহরার বাসিন্দা সুব্রত কাঁড়ার। ৩ থেকে ৫ সেন্টিমিটার সাইজের ভাঙা টালিতে ৩০জন মনীষী ও স্বাধীনতা সংগ্রামীর ছবি এঁকেছেন তিনি। শংসাপত্র, মেডেল সহ বিভিন্ন উপহার বাড়িতে পৌঁছাতেই খুশি আমতা থানার ছোটমহরা গ্রামের কাঁড়ার পরিবার।
কল বিভাগ নিয়ে তৃতীয় বর্ষের ছাত্র সুব্রত। পড়াশোনার পাশাপাশি আঁকাজোকার প্রতি ছোট থেকেই ধ্যান। ইচ্ছে ছিল এমন কিছু করার যাতে করে সকলের কাছে পরিচিতি ছড়িয়ে পড়ে। যেমনটা ভাবনা বাস্তবে রং-তুলিতে ফুটিয়ে তুলেছেন। তারই স্বীকৃতিস্বরূপ মিলেছে সাফল্য। ছেলের এহেন সাফল্যে গর্বিত মা সুমিত্রা কাঁড়ার। তিনি জানান, “ছেলের প্রতি পূর্ণ আস্থা ছিল ওকিছু করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করবেই। উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পর বাবার অসুস্থতার জন্য পড়াশোনা আটকে গিয়েছিল। তারপরেও ওর লড়াই আজ ওকে সম্মান এনে দিয়েছে।”
সুব্রতর কথায়, “শুরুটা হয়েছিল জানুয়ারি মাসে। তিন থেকে পাঁচ সেন্টিমিটারের ভাঙা টালিতে ১২০ মিনিটে ৩০জন মনীষী ও স্বাধীনতা সংগ্রামীর মুখের ছবি আঁকি। ওই ভিডিও সহ তথ্য দিয়ে চার তারিখ আবেদন করি। এরপর ১৭ তারিখ ওঁরা কনফার্ম করে। ২৯ তারিখ আবারো মেল আসে। এবং জানানো হয় পনেরো দিন পরে উপহার মিলবে। সেইমতন একদিন আগে আমার কাছে আসে সার্টিফিকেট, মেডেল, পেন, ব্যাচ ও আই কার্ড। এমন পুরস্কার আমাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করবে।”
গ্রামের ছেলেমেয়েদের আঁকা শেখায় সুব্রত। ওঁর সাফল্য পড়ুয়াদেরকেও নতুন পথ দেখাবে মনে করছেন সুব্রত বাবা কিরণ বাবু। তিনি জানান, “আমাদের মতন গ্রাম্য এলাকার ছেলে হয়েও নতুন কিছু করার জেদ ওর মধ্যে সর্বদা ছিল।” ছেলেকে আরও পথ পার করতে হবে জানিয়েছেন তিনি। আমতার সংস্কৃতি প্রেমি মানুষজন সুব্রতর প্রশংসায় পঞ্চমুখ। ওঁকে সম্মান জানাতে চায়। কয়েকদিনের মধ্যে বাড়িতে গিয়ে দেখা করবেন এমনটাই জানিয়েছেন।
এখানেই থামতে চায় না সুব্রত। আরও অনেক স্বপ্ন দেখে। প্রতিদিন অল্প অল্প করে ক্যানভাসে তুলে ধরে। ধীরে ধীরে আগামিতে প্রকাশ করতে চায়। ওঁর লড়াইয়ে সর্বদা পাশে মিতালি মালিক, সৌরভ মালিক সহ আত্মীয় পরিজনেরা। বাড়িতে এসে মিষ্টিমুখ করিয়ে এসেছে। মিতালির কথায়, “আমরা ভাইয়ের সাফল্যে আপ্লুত। ওঁর প্রতিটি আঁকা চিত্র দেখে অবাক সবাই। স্টুডিও করে গ্রামের ছেলেমেয়েদের বেশি করে পাঠ দিক। সাফল্য ছড়িয়ে পড়ুক প্রত্যন্ত গ্রামেও।