সন্ধে অবধি তৃণমূলের হয়ে ব্যাটিং রাতে রেস্তোরায় বিজেপির দুই নেতার সঙ্গে সাক্ষাৎ! আমি তৃণমূল জল্পনা উড়িয়ে: কুনাল

কল্যাণ অধিকারী, কলকাতা

হাইলাইটস
ক্যানিংয়ে সভায় বিজেপিকে আক্রমণ শানালেন
ফেরার পথে রেস্তোরায় হঠাতি বিজেপির দুই নেতার সঙ্গে সাক্ষাৎ!
সৌজন্য বলে পোস্ট করে জানালেন কুনাল ঘোষ

রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু হয় না। ঘন্টাখানেক আগেও যে দলের নেতাদের মুন্ডুপাত করছেন তিনি। রাতে সেই দলের নেতাদের সঙ্গে রেস্তোরায় সাক্ষাৎ! বিষয়টি দুই দুইয়ে চার হতে সময় নেয়নি। সোশ্যাল মিডিয়ার পাতায় অনেকেই তাঁর পোস্ট দেখতে না পেয়ে জল্পনা বাড়ে। যদিও সমর্থকদের আশ্বস্ত করেছেন। লিখেছেন “তাঁরা বিজেপি। আমি তৃণমূল।” তিনি তৃণমূলের মুখপাত্র কুনাল ঘোষ।

মঙ্গলবার ক্যানিং-১ ব্লকে তৃণমূলের জনসভা ছিল। তীব্র আক্রমণ শানিয়েছেন শোভন-বৈশাখী এবং শুভেন্দুকে। বৈশাখীর নাম নিয়ে বলেছেন, “বৈশাখী আপনি তো অধ্যাপিকা। একটা লোক মেয়রের চেয়ারে বসে ঘুষ খাচ্ছেন। তাঁর সঙ্গে ঘুরে বেড়াতে লজ্জা করছে না! বৈশাখী বলেছেন আমি তো শোভন বাবুকে ঘুষ নিয়ে নিজের চোখে দেখিনি। দেখবেন কী করে, শোভন তো বেড রুমে ঘুষ নেয়নি। ও তো নিয়েছে মেয়রের চেম্বারে। আপনি দেখবেন কোথা থেকে।” তিনি আরও বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলাকে একের পর এক প্রকল্প দিয়েছেন। আমরা শুধু মানুষের কাছে সেটা নিয়ে যাচ্ছি। আর বিজেপি এর থেকে নজর ঘোরাতে যা তা করছে। জাতপাত, ধর্ম, উঁচুনিচু, যা তা করছে। বামের ভোট রামে দেওয়ার ফল চলছে বহু দিন ধরে। বিজেপিকে ভোট দুরের কথা কোন বুথে একটা এজেন্ট পর্যন্ত দিতে না পারে।” কিন্তু রাত শুরুতেই জল্পনা ছড়ায় কুনাল ঘোষকে নিয়ে।

ক্যানিংয়ে সভা থেকে ফিরে আসার সময় তাঁর সঙ্গে রাস্তার ধারে একটি রেস্তোরায় দেখা হয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় ও বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে। জল্পনা ছড়াতে থাকে। রাতেই পোস্ট করেন কুনাল ঘোষ।
তিনি লেখেন, “এত জল্পনা, এত ফোন। দু একটি কথা।
মঙ্গলবার ক্যানিংয়ে তৃণমূলের পদযাত্রা এবং জনসভা করে ফিরছিলাম।
বারুইপুরের কাছাকাছি পথের ধারের একটি রেস্তোরায় সহকর্মীদের নিয়ে দাঁড়াই। টি ব্রেক। শুনলাম একটু আগেই ওখান থেকে গেছেন বিশিষ্ট এক তৃণমূল নেতা।
এর কিছুক্ষণ পর অন্য একটি জায়গায় সভা সেরে ফেরার পথে ওই রেস্তোরায় ঢোকেন বিজেপির দুই নেতা। পুরনো পরিচিত। আলাদা দলে থাকলেও এইসব ক্ষেত্রে সৌজন্য ছাড়া নিশ্চয়ই প্রকাশ্য ঝগড়া হতে পারে না।
দেখা হয়েছে। সৌজন্যের কথা হয়েছে।
ঐটুকুই। এর মধ্যে কোনো পরিকল্পিত বৈঠকের গল্প বা রাজনৈতিক তাৎপর্য নেই।
তাঁরা বিজেপি। আমি তৃণমূল।
কারুর গোপন বৈঠক করার থাকলে সে নিশ্চয় দলীয় সভা থেকে ফেরার সময় সর্বসমক্ষে প্রকাশ্য রেস্তোরায় সেটা করবে না !!
ফলে যাঁরা এ নিয়ে প্রবল চিন্তিত, তাঁরা আপাতত ঘুমিয়ে পড়তে পারেন।
বিয়েবাড়ি গিয়েছিলাম বলে পোস্ট করতে দেরি হল।”

জল্পনা উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। বারেবারে তিনি বলে থাকেন, তৃণমূলের একজন সৈনিক হিসেবে কাজ করে যাবেন। পদ বা লোভের জন্য নয়। একুশে ভোটের আগে তিনি যে বিজেপিকে এক ইঞ্চি জমি জমি ছাড়বেন না তাও বলে থাকেন। তৃতীয় বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী পদে মমতাকে বসাতে ২৪ ঘন্টা মাঠে থেকে লড়াই চালিয়ে যাবেন তিনি। ফলে সাক্ষাৎ নিয়ে জল্পনার আপাতত ইতি বলেই মত রাজনৈতিক মহলের একাংশের।

ছবি কুনাল ঘোষের সোশ্যাল মিডিয়ার পেজ থেকে নেওয়া।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *