ভোটের মরসুমে মিলবে তো একশো দিনের কাজ দুশ্চিন্তায় ফিরে আসা পরিযায়ী শ্রমিকরা
কল্যাণ অধিকারী
গত লকডাউনে ফিরে আসা শ্রমিকদের জন্য ব্যবস্থা ছিল একশো দিনের কাজ। কিন্তু বিধানসভা ভোটের মরসুমে সেই কাজ কি মিলবে সঠিক তথ্য দিতে পারছেন না আধিকারিকরা। লকডাউন শুরু হলে কিভাবে সংসারের হাল টানবেন মুম্বাই-দিল্লি থেকে হাওড়ার বাড়িতে ফিরে আসা শ্রমিকরা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।
দিল্লি তে শ্রমিকের কাজ করেন সাঁকরাইলের বছর পঞ্চাশের রেজাউল করিম। দিল্লির করোনা পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হয়ে উঠছে। কি হবে বুঝতে না পেরেই ঠিকানা বদলে ঘরে ফিরছেন যুবকরা। চাকদা, মহেশতলার তিন যুবকের সঙ্গে সাঁকরাইলের রেজাউল ও তাঁর সঙ্গী ৪ যুবক একসঙ্গে হাওড়ার ট্রেন ধরেন। বাড়ি ফিরতে পেরে স্বস্তি ফিরেছে। কিন্তু গত লকডাউনের স্মৃতি এখনও দগদগে। দিদির দেওয়া চাল আর দাদার দেওয়া স্ত্রী একাউন্টে ৫০০ টাকায় কোনক্রমে দিন কেটেছে। একশো দিনের জব কার্ড না থাকায় কাজও জোটেনি। এখন তো পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে ভোটের মরসুম। দুশ্চিন্তা ঘিরে ধরছে ওঁদের। একি অবস্থা মুন্সিরহাটের অবিনাশ, পৃথ্বী, শুভম দের। কোনক্রমে মহারাষ্ট্র থেকে ফিরেছেন। পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে তাতে করে লকডাউন শুরু হওয়া সময়ের অপেক্ষা বলেই মনে করে ওঁরা! আগেভাগে চলে এসেও বুঝতে পারছে না কি হবে আগামীতে।
খালনা-বাকসি এলাকার পরিযায়ীদের কিছুটা হলেও চিন্তা কম। গত বছরে লকডাউন চলাকালীন বাড়ি ফিরতে পারেনি। সপ্তাহখানেক আধাপেটে থাকতে হয়েছে। অনেক চেষ্টার পরে বাড়ি ফিরেছিল। তারপর স্কুলে কোয়ারাইন্টাইনে। তবে স্বস্তি দিয়েছিল একশো দিনের কাজ। এখন তো ভোট চলছে। আদৌ কি কাজ মিলবে প্রশ্নটা ঘুরছে অনিল, অষ্টদের মুখে মুখে। ওঁদের কথায়, “দিল্লি, মহারাষ্ট্র, গুজরাত, রাজস্থান সর্বত্র পরিস্থিতি কঠিন হচ্ছে। বন্ধুরা ফোন করে জানাচ্ছে টিকিটের জন্য ফিরতে পারছে না। শুনছি আবারও লকডাউন হবে। এখানে যতদিন থাকব একশো দিনের কাজ মিললে অনেকটাই সুরাহা হবে।”
গ্রামীণ হাওড়ার প্রশাসনের আধিকারিকদের একাংশের কথায়, ‘করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দিনদিন বাড়ছে। পাশাপাশি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে প্রশাসনিক স্তরে। একাধিক হাসপাতালে আইসোলেশন শয্যার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কোভিড আক্রান্তদের জন্য বেড রাখা হচ্ছে। পরিযায়ীদের কাজের বিষয় টি প্রশাসনিক ভাবে দেখা হবে। এ বিষয় নিয়ে এখুনি মন্তব্যে নারাজ।’