আমতায় জলমগ্ন গ্রামে মন্ত্রী জাভেদ খান, উদয়নারায়ণপুরে মন্ত্রী অরুপ রায়

কল্যাণ অধিকারী, এডিটর রাজন্যা নিউজ

কুলিয়ায় মঙ্গলবার এসেছিলেন রাজ্যের সেচ মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র। বুধবার প্রবল বৃষ্টির মধ্যেই সেহাগোড়ীতে আসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার আমতা-২ ব্লকে আসলেন রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের মন্ত্রী জাভেদ খান। আমতায় বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকার যথেষ্ট যে উদ্বিগ্ন একাধিক মন্ত্রী এলাকায় আসার মধ্য দিয়ে ফুটে উঠেছে।

সেহাগোড়িতে দাঁড়িয়ে রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতিকে ‘ম্যান মেড’ বলে অভিযোগ করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর মন্ত্রীসভার সদস্য জাভেদ খান শনিবার আসেন আমতা-২ ব্লক এলাকায়। সেখানে বিধায়ক সুকান্ত পাল ও অন্যান্য আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। এরপরেই বন্যা কবলতি এলাকায় অমরাগড়ি চকশালিকায় জলমগ্ন গ্রামে পৌঁছান। জল পার করে বাড়ি বাড়ি গিয়ে গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথাও বলেন তিনি। বন্যার্ত মানুষদের হাতে ত্রাণ তুলে দেন। রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে শাসক-বিরোধী চাপানউতোর চলছে। তারমধ্যেই মমতার সরকারের একাধিক মন্ত্রী এলাকায় পৌঁছেছেন। জলবন্দি মানুষদের পাশে দাঁড়িয়েছেন।  

সাংবাদিকদের সামনে মন্ত্রী জাভেদ খান বলেন, “প্রশাসন খুব ভাল কাজ করছে। প্রতিটি বাড়ি বাড়ি গিয়ে কথা বললাম। রেশন, ত্রাণ পাচ্ছেন। বিদ্যুৎ রয়েছে। বন্যা পরিস্থিতিতে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী আমাকে পাঠিয়েছেন।”

মন্ত্রী ত্রাণের কথা বললেও অনেকক্ষেত্রে ত্রাণ বন্টনে সমস্যা হচ্ছে । গ্রামীণ এলাকায় জল থাকায় জলমগ্ন এলাকায় কেউ আসেনি বলে ক্ষোভ রয়েছে। যদিও এদিন মন্ত্রী একাধিক বাড়ীতে গিয়ে কথা বলেন। কারও হাতে ত্রিপল তুলে দিলেন। কাউকে দিলেন খাদ্যদ্রব্য। জাভেদ খান যখন আমতায় তখন রাজ্যের আর এক মন্ত্রী অরূপ রায় আসেন উদয়নারায়ণপুরে। বিধায়ক সমীর পাঁজাকে সঙ্গে নিয়ে ভবানীপুর ঘোষপাড়াতে প্লাবিত এলাকা পরিদর্শন করলেন রাজ্যের সমবায় মন্ত্রী অরুপ রায়। বোডে করে প্লাবিত এলাকা ঘুরে দেখেন তিনি। পাশাপাশি কয়েকশ মানুষের হাতে তুলে দেন ত্রাণ।

মন্ত্রী অরুপ রায় বলেন, “আমাদের মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যজুড়ে যা উন্নয়ন করেছে আজ সমগ্র দেশের কাছে উন্নয়নের মডেল। ডিভিসি যদি অতর্কিত ভাবে জল না ছাড়ত তাহলে সমস্যা হয় না। মানুষদের যদি কোন সমস্যা থাকে বিডিও আছেন, বিধায়ক আছেন কারো কোন অসুবিধা হবে না। আগে তো এলাকায় কোন ফ্লাড সেন্টার ছিল না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের আমলে তো এগারোটি ফ্লাড সেন্টার হয়েছে। এই সরকারের মুখ্যমন্ত্রী মানুষের পাশে রয়েছেন। কারও কোন সমস্য হবে না।” তবে সমীর পাঁজা মাস্টার প্ল্যান নিয়ে কেন্দ্রকে নিশানা করেন। সমীরবাবু বলেন, “মানবিক মুখ্যমন্ত্রী ২০১৫ সালে এখানে দেখে গিয়ে বন্যা রুখতে কেন্দ্রের সরকারকে বারেবারে বলেও কানাকড়ি দেয়নি। বিশ্ব ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে ও কোষাগার থেকে দিয়ে ২৭০০ কোটি টাকার প্রজেক্ট করছেন। সবে মাত্র এক বছর কাজ শুরু হয়েছে। সম্পূর্ণ হলে তিন জেলায় বন্যা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।”          

রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও মন্ত্রীরা বন্যা কবলিত এলাকায় বারেবারে ছুটে আসছেন কিন্তু রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান রাজ্যপাল আসলেন না কেন প্রশ্ন তুলছেন তৃণমূল কর্মীরা। তাঁদের অভিযোগ, কোন ঘটনা ঘটলেই ঘনঘন টুইট করেন। রাজ্যের একাধিক জেলায় ভয়াবহ বন্যা তারপরো বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শনে আসলেন না কেন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান এই নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূল কর্মীরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *