গ্রামের স্বাস্থ্য কেন্দ্র থাকতেও চিকিৎসার জন্য দু কিমি দূরে যেতে হবে জানাজানি হতেই ক্ষোভ দেখালেন শতাধিক মহিলা
কল্যাণ অধিকারী
গ্রামের সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রে গ্রামের মানুষের প্রতিদিন মিলবে না চিকিৎসা! তার বদলে প্রাথমিক চিকিৎসা পেতে প্রায় দু কিমি দূরে যেতে হবে। এমন কথা জানাজানি হতেই গোটা গ্রাম ছুটে এল স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। শুরু বিক্ষোভ। ছুটে আসলেন ব্লক সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক, থানার পুলিশ আধিকারিক। প্রায় দু ঘন্টা ধরে চলা ক্ষোভ মিটল আধিকারিকদের আশ্বাসে। ঘটনাটি ঘটেছে আমতা-২ ব্লকের ধাঁইপুরে।
স্থানীয়দের কথায়, কয়েক বছর আগে গ্রামের এক প্রান্তে খেলার মাঠের গায়ে গড়ে উঠেছে নীল-সাদা রঙের দু তলা সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র। গ্রামের গর্ভবতী মহিলা থেকে বয়স্ক প্রত্যেকেই চিকিৎসা করাতে আসেন। এমনকি গ্রামের মানুষজন করোনা ভ্যাকসিন নিয়েছিল ওই কেন্দ্র থেকেই। বুধবার হঠাতি জানতে পারেন ওই কেন্দ্রে ধাঁইপুর গ্রামের বাসিন্দারা প্রতিদিন চিকিৎসা করাতে পারবে না। সপ্তাহে একদিন সুবিধা পাবেন। বাকিদিন চিকিৎসা পেতে দু কিমি দূরের স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যেতে হবে। অথচ ওই স্থানে কয়েক দশক আগে জলা-জঙ্গল ছিল। সাপের ভয়ে কেউ যেত না। গ্রামের মানুষজন মাটি ফেলে খেলার মাঠ গড়ে তোলেন। রাস্তা ছিল না মাটি ফেলে রাস্তাও গড়েন। তারপর থেকে খেলাধুলা চলতে থাকে। টুর্নামেন্টে অতিথি হয়ে এসেছেন কলকাতা মাঠের ফুটবলাররাও। গ্রামের মানুষের চিকিৎসার জন্য স্বাস্থ্য কেন্দ্র গড়ে তুলতে জমি দেওয়া হয়। কয়েক বছর আগে সেখানেই গড়ে ওঠে সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র। সবকিছু ঠিকঠাক চলছিল। স্বাস্থ্য কর্মীর কথায় বাঁধে গোলযোগ।
বুধবার অনিতা, মিঠু, প্রিয়া, অমৃতা সহ প্রায় শতাধিক মহিলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সামনে ভিড় জমান। মহিলাদের সঙ্গে গ্রামের পুরুষরাও যোগ দেয়। স্বাস্থ্য কর্মীর সঙ্গে বচসা জুড়ে দেন। গ্রামে মাঠ ছিল না। ছয় মাস ধরে মাটি ফেলে জঙ্গল থেকে মাঠে পরিণত করা হয়। সরকার স্বাস্থ্য কেন্দ্র গড়তে যখন জায়গা পাচ্ছিল না গ্রামের মানুষ মিলিতভাবে জমি দিয়েছিল। আজ গ্রামের সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রে গ্রামের মহিলারা চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হবেন কেন? পাশের গ্রামের মানুষজন আসবেন চিকিৎসা পাবেন। আর গ্রামের মানুষ যাবে দু কিমি দূরে এমনটা মানা যায় না। গেটে তালাও ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। বিষয়টি জানতে পেরে চলে আসেন জয়পুর থানার পুলিশ আধিকারিক। আসেন আমতা-২ বিডিও। বিষয়টি বিবেচনার প্রাথমিক আশ্বাসে খোলে স্বাস্থ্য কেন্দ্র।
বিডিও মাসুদুর রহমান জানান, বিষয়টি হচ্ছে সাব সেন্টার গুলো ভাগ হয়েছে এটা নিয়ে স্থানীয়দের অভিযোগ ছিল। ওরা ওখান থেকে কেন আসবে। কেনই বা স্বাস্থ্য কেন্দ্র ভাগ করা হবে। সকলের সঙ্গে কথা বলেছি ওঁরা আমার সঙ্গে ব্লকে এসে কথা বলবে বলেছে। বিধায়ক সুকান্ত পাল জানান, মানুষ যেটা চাইবে সেটাই হবে। সরকার মানুষের কথা শোনে। তাই কোনপ্রকার সমস্যা হবে না। প্রয়োজনে আমি নিজে কথা বলে নেব। গ্রামের মানুষের চিকিৎসা সবার আগে।