ওগো মোর প্রিয় ‘মহালয়া’

কল্যাণ অধিকারী, এডিটর রাজন্যা নিউজ

আজ রাতটা না-হয় না ঘুমিয়ে-ই কাটিয়ে দেব। ভোর বেলায় শিশির ভেজা দুর্বায় বিছিয়ে থাকবে শিউলি। চুবড়ি ভরে ফুল কুড়িয়ে জমা করব। তারপর রেডিওতে শুরু হবে মহালয়া। বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র ভাবগম্ভীর কন্ঠে পাঠ করবেন মহিষাসুরমর্দিনী। উফফ একটা অনন্ত ভোর। আনন্দের শেষ থাকবে না…

পুরাতনের কাছে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ইনস্টাগ্রাম শুধুমাত্র ক’টা নাম। পাড়ার হলুদ মুখের দুর্গা, চোখ টানা টানা আর বড়, তার কাছে কিছুই নয়। সকাল-সন্ধে একবার হলেও দেখতে যাওয়া। সব রয়েছে দুর্গাপুজোর নির্ঘণ্ট, মহালয়া, ষষ্ঠী। কিন্তু কোথায় যেন হারিয়ে যাচ্ছে সেদিনকার পুজো’-র আমেজটা। মহালয়া দেখার জন্য রাত জেগে থাকা এসব এখনকার সময়ে বড্ড সেকেলের।

ঘন্টাখানেক সোশ্যাল মিডিয়া বন্ধ থাকায় হৈহৈ রব। যে মানুষটা ফোন করতে ভুলে গিয়েছিল সেজনও টেক্সট মেসেজ করে জিজ্ঞাসা করছে হোয়াটসঅ্যাপ চলছে? আমরা একটা মুহূর্ত ভাবিনা সোশ্যাল মিডিয়া ছাড়া কাটাব। খবরের দুনিয়ায় হোয়াটসঅ্যাপ পরিচিত সঙ্গী। ভিডিও বা ছবি, লেখা বা তথ্য আদানপ্রদান সবটাই সঙ্গী হোয়াটসঅ্যাপ। ফ্যাক্স করার দিন আর নেই। ঠিক যেমনটা অচল ‘বিএসএনএল’!

রাতে ফেরার পথে মন্দিরের সামনে দাঁড়িয়ে যেতে হল। দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক, গণেশ, মহিষাসুর সবার গায়ে রঙের প্রলেপ পড়েছে। কয়েক মুহূর্ত ঠায় দাঁড়িয়ে ছিলাম। বড্ড ভালো লাগছিল। বছরভর প্রতীক্ষার পরে মা আসছেন। ভোর থেকে বাজবে মহিষাসুরমর্দিনী। তারপর কোথা দিয়ে কটাদিন পার। তারপর! ঢাকের বাদ্যি বাজবে। পাড়ায়-পাড়ায় মাইকে বাজবে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, মান্না দে, সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের গান। নবপত্রিকা স্নান, সন্ধিপুজো ইত্যাদি-ইত্যাদি।

©-কল্যাণ অধিকারী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *