জন্মদিনে স্টেশনে ভিক্ষাবৃত্তি করা বৃদ্ধ-বৃদ্ধা, মানসিক ভারসাম্যহীনদের মাছ-ভাত-সব্জি খাওয়ালেন শ্যামপুরের রামানন্দ
কল্যাণ অধিকারী, এডিটর রাজন্যা নিউজ
করোনায় লাগাম টানতে মে মাসের ৬ তারিখ থেকে বন্ধ রয়েছে লোকাল ট্রেন পরিষেবা। এমন একটি সময় সমস্যায় রয়েছেন ভিক্ষাবৃত্তি করা বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা। স্টেশনে নিত্যযাত্রীরা ঠিকঠাক না আসায় টান পড়েছে ভিক্ষাবৃত্তি রুজিতে। বাধ্য হয়েছেন কেউ কেউ রাস্তার ধারে দোকানে ভিক্ষা করতে। চোখের সামনে দেখে নিজেকে স্থির রাখতে পারেনি। শনিবার জন্মদিনে উলুবেড়িয়া ও ফুলেশ্বর স্টেশনে ভিক্ষাবৃত্তি করা বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের জন্য খাবার রান্না করে এনে খাওয়ালেন শ্যামপুরের যুবক রামানন্দ সরকার।
ভাত-ডাল-সব্জি, মাছ-ডিম বানাতে ভোর থেকে শুরু হয় রান্না। এরপর প্যাকেট করা। তারপর বাইকে করে প্রায় তিরিশ কিমি পথ পাড়ি দিয়ে শ্যামপুর থেকে উলুবেড়িয়া স্টেশনে পৌঁছে যায়। রান্না করে আনা প্যাকেট করা খাবার তুলে দেন বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের। শুনশান প্ল্যাটফর্মে বসে থাকা অসহায় মানুষগুলোর সঙ্গেই জন্মদিনটা কাটালেন। এরপর বাইক নিয়ে আবারও এগিয়ে চলা। ফুলেশ্বর স্টেশন তারপর ফুলেশ্বর বাংলো থেকে শ্যামপুর, শিবগঞ্জ রাস্তায়-রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষ গুলোর হাতে তুলে দেন ভাত, ডাল, সব্জি, মাছ, ডিম। এভাবেই জন্মদিনটা পালন করলেন রামানন্দ।
সমাজ সেবার কাজ করা রামানন্দ’র কথায়, উলুবেড়িয়া স্টেশন দিয়ে কলকাতা বা অন্যত্র গেলে প্রায়শই দেখতাম বয়স্ক মানুষদের ভিক্ষা করতে। লোকাল ট্রেন এখন বন্ধ তাই জন্মদিন টা কেক না কেটে ওঁদের মুখে খাবার তুলে দেবার চিন্তাভাবনা করি। সেইমত ভাত ডাল সব্জি, মাছ, ডিম আনি। ওঁনাদের খাওয়ানোর পর উলুবেড়িয়া থেকে থেকে শ্যামপুর পর্যন্ত রাস্তার ভিক্ষা করা মানুষদের খাবার তুলে দিয়েছি। সঙ্গে দিয়েছি মাস্ক।
স্থানীয়দের কথায়, ট্রেন না চলায় ভিক্ষা করা বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা বড্ড অসহায়। ওই যুবককে দেখা গেল স্টেশন এলাকায় বেশ কয়েকজনকে খাবার দিচ্ছেন। রাস্তায় ভিক্ষা করা মানুষদেরও খাবারের প্যাকেট দিচ্ছেন। জন্মদিনটা এভাবে পালন করে সমাজে একটা ভালো দিক তুলে ধরছেন উনি। রামানন্দ ‘র পরিচিত দের কথায়, অসুস্থ গ্রামবাসীদের চিকিৎসা করানো। হাসপাতালে ভর্তি করানো সমস্তটাই ও করে থাকে। বিভিন্ন গ্রামে গাছ লাগাতে ও গাছ বাঁচাতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের গাছের চারা দিয়ে পরিবেশ রক্ষার বার্তা দিয়েছেন। এভাবেই ও মানুষের পাশে থাকুক।