দিদির মুখে কুলিয়া সেতু নির্মাণ কথা, দুই পঞ্চায়েত এলাকার মানুষের মুখে হাসি ফুটেছে
কল্যাণ অধিকারী, এডিটর রাজন্যা নিউজ
শুক্রবার বিকেলে হুড়হুড়িয়া খালের উপর ঢলতে যাওয়া সূর্যের পানে তাকিয়ে চিতনানের সত্তরোর্দ্ধ বৃদ্ধের সাফ জবাব, ‘দিদি বলেছেন সেতু নির্মাণ করবেন ওতেই স্বস্তি! মৃত্যুর আগে সেতু দেখে যেতে পারব। দিদি বলেছেন সেতু বানাবেন তখন সেতুর কাজ শীঘ্রই শুরু হবে। ভাটোরা, ঘোড়াবেড়িয়া ও চিতনান এলাকার হাজার-হাজার মানুষের মুখে আলোচনার শেষ নেই।
পাঁচলার সরকারি অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর মুখে কুলিয়া সেতু নির্মাণ কথা শীতের বিদায় বেলায় দ্বীপাঞ্চল এলাকার তাপমাত্রা অনেকটাই বাড়িয়ে দিয়েছে। স্থানিয়দের একাংশের কথায়, দ্বীপাঞ্চলের মানুষ নেতাদের মুখের কথা অনেক শুনেছে। সেতু নিয়ে কম রাজনীতি হয় না এখানে। এখানকার খাল দিয়ে যত না জল যায় তার থেকে বেশি সেতু নিয়ে আশ্বাস দিয়েছে রাজনীতির লোকজন। তারপরেও সেতু নির্মাণ নিয়ে একটা ইটও গাঁথা হয়নি। রাতের দিকে চিকিৎসা করাতে যেতে রোগীদের সমস্যায় বেশি পড়তে হয়। একথা সবাই বোঝে তারপরেও এতবছর সেতু নির্মাণ হল না। দিদি বলেছেন এতেই দুটি পঞ্চায়েত এলাকার গ্রামবাসীরা খুশি। কিন্তু কাজটা দ্রুত শুরু হোক এটাও দিদি নজরে রাখুক চাইছে গ্রামের মানুষজন।
গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে কুলিয়া ঘাটে সেতু নির্মাণ এলাকা পরিদর্শন করেছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী পুলক রায়। গ্রামবাসীদের আশ্বাস দিয়েছিলেন সেতু নির্মাণ হবে। কুলিয়া সেতু তিনি নির্মাণ করে ভাটোরা ও ঘোড়াবেড়িয়া চিৎনান এই দুটি গ্রাম পঞ্চায়েতে বসবাসকারী ৫০-৬০ হাজার মানুষকে জেলার সঙ্গে জুড়বেন। মুখ্যমন্ত্রী পাঁচলার সভামঞ্চ থেকে সেতু নির্মাণ হবার কথা বলেছেন। পুলক রায়ের কথায়, “মার্চ মাসের শুরুতেই সেতু নির্মাণ কাজ শুরু হবে।” আমতার বিধায়ক সুকান্ত পালের কথায়, “কুলিয়া সেতু নির্মাণের দাবি বহুদিন ধরে জানিয়ে এসেছি। দিদি আমাদের কথা রেখেছেন। আমরা তাঁর প্রতি চির কৃতজ্ঞ।”
শিয়রে পঞ্চায়েত ভোট। গ্রামীণ হাওড়ার দ্বীপাঞ্চলে সেতু নির্মাণ নিয়ে আশ্বাস ভোট পাওয়ার বার্তা এমনটাই মনে করছে বিরোধীদলের নেতা-কর্মীদের একাংশ। কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা তথা এলাকার প্রাক্তন বিধায়ক অসিত মিত্র কুলিয়া সেতু নির্মাণ নিয়ে দৌড়ঝাঁপ করেছিলেন। কিন্তু সেতু গড়তে পারেননি। পঞ্চায়েত ভোটের আগে সবটাই রাজনীতিতে এগিয়ে থাকার লড়াই বলেই মনে করছেন বিরোধীরা। আমতার বিধায়কের পাল্টা দাবি, “আমরা দিদির কাছে কৃতজ্ঞ। সেতু নির্মাণ হবে শুনেই দ্বীপাঞ্চলের মানুষদের মধ্যে খুশি ফিরে এসেছে। এমন খুশির দিনেও বিরোধীদের কাজ সবকিছুতেই রাজনীতি টেনে আনা।”