জেলার প্রত্যন্ত এলাকা আজানগাছি কাশমলি। এই পথেই কয়েক কিমি এগোলেই তৃণমূল কর্মী সেখ সিরাজের দোচালা টিনের ঘর। ১৩ মে শুক্রবার দুপুরে বাংলা জয়ের একাদশ বর্ষপূর্তি পালন করছেন বাড়ির উঠোনে। মমতার দলের বুথ স্তরের সৈনিক অশতিপর বৃদ্ধ থাকেন ঝুপসি ঘরেই। নেত্রীর ছবি গামছা দিয়ে মুছতে মুছতে বলেন, “বাম আমলে ঘর ভেঙে দিয়েছিল, মার খেয়েছি তারপরও দিদি ছাড়া কাউকে ভোট দিইনি। কিছু পাওয়ার জন্য নয়, উনি আমাদের সর্বময় নেত্রী ওঁনাকে দেশের নেতা গঠনে ভূমিকা পালন করবে আমার মত নিচুতলার কর্মীরাই।”
মহাকরণের অলিন্দে দাঁড়ানো দিদির ছবি বাঁধিয়ে রেখেছেন আর এক বুথস্তরের কর্মী লালচাঁদ। বিঘা দুয়েক জমি চাষ করেই জীবন জীবিকা চালান। পরিবর্তনের সরকার গঠনের পর থেকে উল্কার গতিত উত্থান হয়েছে সমস্তস্তরের নেতাদের। গ্রামের বুকে অট্টালিকা বাড়ি বানিয়ে কেউ কেউ তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। সবটাই খবরে দেখেছেন। লালচাঁদের কথায়, “দিদি আমাদের এক সুতোয় বেঁধেছেন। বিরোধীদের এত কুৎসা, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তীক্ষ্ণ নজর তারপরও দিদি লক্ষ্যে অবিচল। উন্নয়নকে পাথেয় করে এগিয়ে চলেছে বাংলা। অনেকক্ষেত্রে স্থানীয় নেতাদের গা জোয়ারি বিরোধীদের কিছুটা জায়গা করে দিচ্ছে। সামনে পঞ্চায়েত ভোট স্থানীয় স্তরে নজর না দিলে মানুষের নজর টলতে পারে। বাম জমানায় কান্দুয়ায় কংগ্রেস কর্মীদের হাত কেটে দেওয়ার পর দিদি এসেছিলেন দেখতে। সেই সময় ভয়ে দেখতে যেতে পারিনি। কিন্তু গত বিধানসভা ভোটের প্রচারে বাকসিতে দিদিকে দেখেছিলাম। বুথস্তরের কর্মীদের কাছে উনি শেষ কথা। সাফল্য আরও আসবে তবে তা যেন দখলের না হয়ে যায়!
হাওড়ার গ্রামীণ এলাকার বুথস্তরের যুবকর্মী সুবীর ঢল, অনুপ পাঁজা, প্রীতম রীত প্রত্যেকেই জানিয়েছেন, কংগ্রেস-সিপিএম তাল মিলিয়ে চলছে এটা বুঝতে পেরেছিলেন মমতা দি। তৃণমূল দল গড়ে বাম সরকারকে হঠাতে বদ্ধপরিকর হয়েছিলেন। তাঁর জন্যই বাংলায় নতুন সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, এ কথাটা ভুললে চলবে না। তবে ছোটছোট বিষয় নিয়ে কমিশন নেওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। এমনটা যে দলের বিরুদ্ধাচারণ করা এটাই মনে করছে না অনেকে। প্রতিটি পঞ্চায়েত এলাকায় ঢালাই রাস্তা থেকে পানীয়জল পৌঁছেছে। দুয়ারে সরকার প্রকল্পের সাফল্য বিরোধীরা অনেক পিছিয়েছে। এই সাফল্য আগামীর পথ দেখাবে। তা যেন কোনভাবেই দলের একাংশের কাজকর্মে ফিকে না হয়।
১৩ মে উপলক্ষে মা মাটি মানুষের নেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী পুলক রায়। তিনি একটি পোস্ট করেছেন, মা মাটি মানুষের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বহু সংগ্রামের ফলস্বরূপ ২০১১ সালের আজকের দিনেই বাংলার মাটিতে দীর্ঘ ৩৪ বছরের বাম অপশাসনের অবসান ঘটিয়েছেন। তারজন্য বাংলার মা মাটি মানুষের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ।