হাসপাতালে নিগ্রহের ঘটনায় পেন ডাউন চিকিৎসকদের প্রভাব পরেনি
চিকিৎসায় ১১ দফা দাবি চিকিৎসকদের
কল্যাণ অধিকারী, রাজন্যা নিউজ
উলুবেড়িয়া হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসককে হেনস্তার প্রতিবাদে পেন ডাউন কর্মসূচি পালন করলেন হাসপাতালের সিনিয়র রেসিডেন্ট চিকিৎসকরা। শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টো পর্যন্ত চলে এই কর্মসূচি। যদিও এই কর্মবিরতির ফলে হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবার তেমন একটা ব্যাহত হয়নি বলে দাবি রোগী ও রোগীর আত্মীয়দের। যদিও আন্দোলনরত চিকিৎসকরাও পরিষেবা ব্যাহত না করে আন্দোলন চালাবেন বলে জানিয়েছেন।
উলুবেড়িয়া হাসপাতালে মহিলা জুনিয়র চিকিৎসকের শ্লীলতাহানি ও খুনের হুমকির অভিযোগে, পুলিশ আগেই ট্রাফিক হোমগার্ড-সহ তিনজন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে। এ দিন তাঁদের পুলিশি হেফাজতের মেয়াদ শেষ হওয়ায় আবারও উলুবেড়িয়া আদালতে তোলা হয়। চিকিৎসকদের একগুচ্ছ দাবি রাখা হয়েছে। জানা যাচ্ছে, বর্তমানে উলুবেড়িয়া হাসপাতালে জুনিয়ার ও সিনিয়র রেসিডেন্ট মিলিয়ে ৭০ থেকে ৮০ জন চিকিৎসক রয়েছেন। নিগ্রহের প্রতিবাদে তাঁরা ১১ দফা দাবি জানিয়ে ‘পেন ডাউন’ কর্মসূচি নিয়েছিলেন। তাঁদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে হাসপাতালের নিরাপত্তা বাড়ানো পাশাপাশি অভিযুক্ত অস্থায়ী হোম গার্ডকে পুরোপুরি তাঁর চাকরি থেকে বরখাস্ত করা। এছাড়া দাবি রয়েছে, হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়িতে পুলিশকর্মী বাড়ানো, প্যানিক বোতাম লাগানো, ওয়ার্ডে ঢোকার মুখে যেখানে লিফট রয়েছে সেগুলো সব সময় বন্ধ রাখা। রোগীর সঙ্গে মাত্র একজন করে আত্মীয়দের ঢোকার অনুমতি দেওয়া, কর্মীদের সচিত্র পরিচয়পত্র তৈরি-সহ একাধিক দাবি তুলে সরব হয়েছেন তাঁরা। এই দাবিগুলির মধ্যে ইতিমধ্যেই কর্তৃপক্ষ হাসপাতালের নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য পদক্ষেপ নিয়েছে। হাসপাতালে ভারপ্রাপ্ত মেডিক্যাল সুপার অ্যান্ড ভাইস প্রিন্সিপাল সুবীর মজুমদার জানিয়েছেন, “পুলিশের তদন্তে সন্তুষ্ট। নিরাপত্তার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।” হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, জুনিয়রদের দাবিদাওয়া মেনে নেওয়া হয়েছে। তাহলে কেন পেন ডাউন কর্মসূচি? জানা গিয়েছে, জুনিয়র চিকিৎসকদের উপরমহল থেকে চাপের কারণে তাঁরা এই কর্মসূচি করছেন।
এই প্রসঙ্গে উলুবেড়িয়া মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপাল সনৎ কুমার ঘোষ এবং ভারপ্রাপ্ত ভাইস প্রিন্সিপাল তথা মেডিকেল সুপার সুবীর মজুমদার জানান, কর্তৃপক্ষের তরফে নিষেধ করা হলেও শুক্রবার সকাল থেকে চিকিৎসকরা প্রতীকী কর্মবিরতির ডাক দেন। তবে এতে হাসপাতালের পরিষেবা ব্যাহত হয়নি। ডাক্তাররা ওপিডি ও জরুরি বিভাগে রোগী দেখেছেন।
উল্লেখ্য, কালীপুজোর দিন উলুবেড়িয়ার শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজের কর্তব্যরত চিকিৎসককে নিগ্রহের ঘটনা ঘটে।

