পুজোয় ডেস্টিনেশন মেঘ পাহাড়ের শহর দার্জিলিং
কল্যাণ অধিকারী এডিটর রাজন্যা নিউজ
পুজোয় ডেস্টিনেশন মেঘ পাহাড়ের শহর দার্জিলিং। বুকিং কিন্তু তেমনটাই জানাচ্ছে। করোনা লকডাউন, ‘দো গজ কি দূরি’ বজায় রাখতে গিয়ে হাঁপিয়ে উঠেছে কংক্রিটের জঙ্গলে বসবাস করা আম বাঙালি। সপ্তাহখানেক পাহাড়ে কাটিয়ে আসতে চাইছে সকলে। ফলে পুজোর সময় পর্যটনের নতুন সূর্যোদয় হতে চলেছে দার্জিলিং, কালিম্পং জুড়ে।

উত্তর কলকাতার বাসিন্দা অভিরূপ ব্যানার্জির কথায়, “কলকাতা-বাগডোগরা বিমানের টিকিটের ভাড়া দ্বিগুণ হয়েছে। সাড়ে তিন হাজারের নিচে টিকিট নেই। একটু ভালো হোটেল বুক করতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে দু হাজারের নিচে মিলছে না। ফলে বোঝাই যাচ্ছে পুজোয় আকর্ষণের কেন্দ্রে থাকছে দার্জিলিং।” গড়িয়ার বাসিন্দা অলিভিয়া সামন্তর কথায়, “আমরা ঠিক করেছি ধর্মতলা থেকে এসি ভলভো বাসে করে যাব। ভাড়া তেরোশ টাকার উপর বলছে। তবে যাতেই যাই পাহাড়ি রাজ্য সিকিম নয় ক’দিন দার্জিলিং থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘার শিখরগুলি কে দেখতে চাই।” দীর্ঘ করোনা বিধিনিষেধের মধ্যেই পুজো এসে গিয়েছে। অনেক হয়েছে, এবার একটু জনপ্রিয় জায়গাগুলোয় পৌঁছে যেতে মন চাইছে। কথা হচ্ছিল কদমতলার বাসিন্দা সহেলীর সঙ্গে। ব্যাঙ্কের কর্মী সহেলী চাইছে মা-বাবার সঙ্গে ঘুরে আসতে। তা যদি টয় ট্রেনে চেপে হয় তাহলে তো কথাই নেই। কিন্তু তখন কি চলবে টয় ট্রেন ? প্রশ্নটা শুধুমাত্র সহেলীর নয় ভ্রমণ প্রিয় মানুষদের। দার্জিলিং-এর সঙ্গে টয় ট্রেনের সম্পর্ক বহু পুরনো।

কলকাতার বুকিং সংস্থার আধিকারিকদের কথায়, এবারের পুজোয় চলে যেতেই পারেন দার্জিলিং সহ আশপাশের ভ্রমণ স্থানে। প্রায় প্রতিদিন নিয়ম করে বাগডোগরার টিকিট বুকিং চলছে। ১ঘন্টা পনেরো মিনিটের যাত্রাপথে দেখা মিলবে ভেসে যাওয়া পুঞ্জ পুঞ্জ সাদা মেঘ। তবে বিমান শুধু নয় এনজিপি অবধি ট্রেনের বুকিং বেড়েছে। করোনা, লকডাউন নিয়ে সেইমতন ব্যবসা জমেনি। পুজোর আগে ক্রমশ স্বাভাবিক হচ্ছে ব্যবসা। ডুয়ার্স নিয়েও আগ্রহ দেখা যাচ্ছে।

হোটেলের ব্যালকনি তে বসে বিশ্বের তৃতীয় উচ্চতম শৃঙ্গ কাঞ্চনজঙ্ঘা তাকিয়ে দেখতে দেখতে গরম চায়ের কাপে চুমুক। চাইলে দার্জিলিং-এর চৌরাস্তার উপরেই হওয়া দুর্গা পুজো দেখে নিতে পারবেন। দিতে পারেন অষ্টমী পুজো। তারপর ম্যাল থেকে পশ্চিমের পাহাড়ে চোখ মেলে তাকিয়ে থাকুন। দুচোখ জুড়ে শান্তির রেস বয়ে যাবে। চাইলে ঢালু পথ দিয়ে হেঁটে পৌঁছে যান কোন অচেনা মেঘের সন্ধানে। গাড়ি নিয়ে পৌঁছে যেতে পারেন তিনচুলে। পুজোর মাস খানেক আগে থেকেই পর্যটকদের জন্য সেজে উঠছে হোটেল, রাস্তাঘাট। ফলে এবারের পুজোয় আপনি চলে যেতেই পারেন পাহাড়ের শহর দার্জিলিং। অভ্যর্থনা জানাতে প্রস্তুত পাহাড়।
ছবি সংগৃহীত (সোশ্যাল মিডিয়া) বাপ্পা নস্কর।