বছর শেষ ও নতুন বছর শুরুতে জমজমাট পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম ও সুন্দরবন

কল্যাণ অধিকারী এডিটর রাজন্যা নিউজ

দিঘা-পুরী ও দার্জিলিং নয়! কাছেপিঠে ভ্রমণে মানুষজনের কাছে তিনটি ক্ষেত্র এখন পছন্দের। পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম ও সুন্দরবন। লোকাল বা এক্সপ্রেস ট্রেনে সহজেই এই তিন জায়গায় পৌঁছে যাওয়া যায়। হাতে দু-তিন দিন ছুটি পেলেই অল্প লাগেজ নিয়ে বেরিয়ে পরছেন। নিরিবিলি প্রকৃতির মাঝে পরিবার ও বন্ধু বর্গের সঙ্গে কাটাচ্ছেন সময়।

বছর শেষে রীতিমতো জনপ্লাবন ছিল পুরুলিয়ায়। হাওড়া বা সাঁতরাগাছি থেকে পুরুলিয়া গামী সমস্ত ট্রেনেই মানুষজন ভিড় করে পৌঁছেছেন। কিন্তু গেলেই তো আর ভ্রমণ সম্পূর্ণ হয় না। মাথা গোঁজার ঠাঁই চাই। হোটেল বা হোমস্টেতে থিকথিকে ভিড়। একি সঙ্গে সাইট সিন দেখার জন্য গাড়ি ভারা দ্বিগুণ হাঁকিয়েছে! সাইট সিন দূরের কথা, পরিস্থিতি যা মাথা গোঁজার ঠাঁই পেতে হন্যে হয়ে খুঁজতে হয়েছে পর্যটকদের। গ্রামবাসীদের কাছে পৌঁছে আশ্রয়ের আবেদন করতেও দেখা গিয়েছে এমনটাই পর্যটকদের কথায় জানা গেছে। হোটেল সংগঠনের কথায়, লাখো মানুষের ভিড় ছিল পুরুলিয়ায়।

সুন্দরবন মানুষজন আসেন বাঘ দেখতে। বাঘ কি আর সহজে দেখা দেয়! রয়েল বেঙ্গল টাইগারের দেখা না পেলেও মনের আত্তি মেটান কুমির, বক এবং খাঁড়ি ও ম্যানগ্রোভ জঙ্গল দেখে। কিন্তু বছর শুরুতে সুন্দরবন ভ্রমণ সুখকর হয়নি পর্যটকদের। লাইসেন্স রিনিউ না করানোর কারণে সুন্দরবনের অভিমুখে যাত্রা করেনি বহু লঞ্চ ও নৌকা। সুন্দরবন দেখার ইচ্ছে মাটি হয়েছে পর্যটকদের। সুন্দরবন যাত্রার লঞ্চ অমিল হওয়ায় বছর শুরুতে ম্যানগ্রোভের জঙ্গল উপভোগ করার সুযোগ হারিয়েছেন বহু পর্যটক। ফলে সুন্দরবন গিয়ে চূড়ান্ত হয়রানির মধ্যে পড়তে হয়েছে।

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা ঝাড়গ্রাম। বছর শেষে বহু পর্যটক ঘুরতে আসেন। মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকা গাছের মধ্যে দিয়ে ঝাঁ চকচকে রাস্তা দিয়ে ছুটে চলে গাড়ি। পর্যটকদের আকর্ষণ হিসাবে রয়েছে বহু জনপ্রিয় স্থান। প্রথমেই নাম আসে ঝাড়গ্রাম রাজবাড়ি। অনেকে আবার এখান থেকেই পৌঁছে যান বেলপাহাড়ি। কিন্তু ঝাড়গ্রামের আনাচে-কানাচে রয়েছে একাধিক দর্শনীয় স্থান। কনকদুর্গা মন্দির, জুলজিকাল পার্ক, চিল্কিগড় রাজবাড়ি, কাঁকড়াঝোর, গাড়াসিনি পাহাড়। কিন্তু উপজাতি সংগঠনের ডাকা হঠাত বনধে দোটানায় পড়েন পর্যটকরা। বছর শেষের দিনে জঙ্গলমহল জুলজিকাল পার্কে টিকিট বিক্রি হয়েছে প্রায় ৫২ হাজার টাকা। তবে যতটা ভিড় আশা করেছিলেন ততটা হয়নি এমনটাই মত হোটেল সংগঠনের।

জঙ্গলমহল এর আগে দিনের পর দিন বনধের দৃশ্য দেখেছে। পরিস্থিতি এখন সম্পূর্ণ আলাদা। ঝাঁ চকচকে রাস্তা। পর্যাপ্ত হোটেল। বছরভর পর্যটকদের আনাগোনা থাকে জঙ্গলমহলে। তারমধ্যেই জনজাতি সংগঠনের ডাকা বনধে কিছুটা প্রভাব ছিল ঝাড়গ্রামে। ভ্রমণ প্রিয় মানুষ এসবকে কবে ভয় পেয়েছে। বছরশেষে ও নতুন বছর শুরুতে ঝাড়গ্রামে ভিড় করেছেন বহু পর্যটক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *