প্রতিবন্ধী কামরায় বালির তবলা বাদকের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধারে তদন্তে নামল রেল পুলিশ
কল্যাণ অধিকারী ও ব্যুরো রিপোর্ট
হাওড়াগামী কাটিহার এক্সপ্রেসের মধ্যেই বালির তবলা শিক্ষকের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধারে তদন্ত করবে রেল পুলিশও। সূত্রের খবর, এই ঘটনায় ইতিমধ্যে হাওড়া জিআরপি স্বতঃপ্রণোদিত মামলাও রুজু করেছে। কাটিহারের রামকৃষ্ণ মিশনে বিগত প্রায় ১২ বছর ধরে তবলা শেখাতেন বালির বাসিন্দা ষাটোর্ধ-সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। গার্ডের কামরার খুব কাছের প্রতিবন্ধী কামরায় সৌমিত্র বাবুর দেহ উদ্ধার হয়। খোয়া গিয়েছে ব্যাগ ওঁ মোবাইল এবং গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র। ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে সঠিক তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে।
বালির ঘোষপাড়ার বাসিন্দা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। পরিবার সূত্রে জানা গেছে, তবলার তালিম দিতে কাটিহার গিয়েছিলেন। ফেরার জন্য সোমবার রাতে বিহারের কাটিহার থেকে ট্রেন ধরেন। রাতে আর পরিবারের সঙ্গে কথা হয়নি। মঙ্গলবার সকালে কাটিহার এক্সপ্রেস হাওড়ায় ঢোকে। প্রতিবন্ধী কামরার বাঙ্কে তার দেহটি পড়েছিল। শরীরে একাধিক জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে জানা গেছে। মৃতের কাছে পরিচয়পত্র বা টিকিট না থাকায় দেহ সনাক্ত করতে সমস্যা হয়। পরিবারের সদস্যরা সকালে ফোন করলে সুইচ স্টপ ছিল মোবাইল। এরপর জিআরপিকে ফোন করলে ওঁরা বলেন, কাটিহার এক্সপ্রেসে একটি দেহ উদ্ধার হয়েছে। এরপর পৌঁছে দেহ শনাক্ত করা হয়। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে রেল। ইতিমধ্যে স্বতঃপ্রণোদিত মামলাও রুজু করেছে হাওড়া জিআরপি।
রেল পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার তদন্তে সিসিটিভি ফুটেজ মূল হাতিয়ার হতে পারে। মালদহের আগে খুন হতে পারেন এমনটাই মনে করা হচ্ছে। সেইমতন ওই দিককার স্টেশনগুলির সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ওই কামরায় কারা উঠেছেন কারা নেমেছেন সবটাই সিসিটিভিতে উঠে আসবে। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
শ্যালক ইন্দ্রজিৎ ভট্টাযার্য বলেন, সৌমিত্র বাবুর আদি বাড়ি বিহারের কাটিহারে। ওখানে ওঁর বাবা রেলে চাকরি করতেন। কাটিহারের রামকৃষ্ণ মিশনে বিগত প্রায় ১২ বছর ধরে তবলা শেখাতেন। ওখানকার কিছু ছাত্রের বাড়িতে গিয়েও তবলার তালিম দিতেন। বালিতে ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। রয়েছেন স্ত্রী ওঁ এক ২৪ বছরের ছেলে। সৌমিত্র বাবুর হাতের সমস্যা। যে কারণে প্রতিবন্ধী কামরায় ছিলেন। সঙ্গে থাকা ব্যাগে ছিল আধার কার্ড, প্যান কার্ড, ব্যাঙ্কের বই, চেক বুক এবং একটি ৯-১০ হাজার টাকার মোবাইল। সমস্তকিছু হাতিয়ে নিয়েছে দুষ্কৃতীরা। মনে করা হচ্ছে প্রতিবন্ধী কামরায় রেল পুলিশ ছিল না। যে কারণে এতবড় ঘটনা ঘটে যায়। রেলের গাফিলতি ছিল বলে মনে করা হচ্ছে। এটা কোন স্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা হতেই পারে না।