প্রাচীন বাঙালবাবুর ব্রিজ নতুন বছরেই ভাঙবে রেল! নস্টালজিক হাওড়ার প্রবীণেরা
কল্যাণ অধিকারী এডিটর রাজন্যা নিউজ
হাওড়া স্টেশন থেকে পশ্চিম দিকে তাকালেই চোখে পড়ে, রেল লাইনের উপর সাদা রঙের অর্ধচন্দ্রাকৃতির বাঙালবাবুর ব্রিজ বা চাঁদমারি ব্রিজ। মাথার দিকে লেখা ১৯৩৩। ব্রিজটি ইস্ট ইন্ডিয়ান রেলওয়ে দ্বারা ১৯৩৩ সালে নির্মিত হয়েছিল। হাওড়াবাসীর কাছে আজও নস্টালজিয়া। উত্তর ও দক্ষিণ হাওড়ার অজস্র মানুষ প্রতিদিন এই সেতু দিয়ে যাতায়াত করেন। কিন্তু বয়সের ভারে কার্যত ধুঁকতে থাকা ব্রিজটির পাশে গড়ে উঠছে আধুনিকমানের একটি ঝুলন্ত কেবল ব্রিজ। বছর ঘুরলেই ভেঙে ফেলা হতে পারে ঐতিহ্যের বাঙালবাবুর ব্রিজটি।
পূর্বরেল সূত্রে জানা গিয়েছে, অদূর ভবিষতের কথা ভেবে ও গাড়ির চাপ নেওয়ার জন্য নতুন ব্রিজটি চার লেনের তৈরি হচ্ছে। চওড়ায় হবে অন্তত ১৫ মিটার। এতে করে ট্রেন চলাচলে কোন বাধাই থাকবে না। কেবল টাইপ ব্রিজটির প্রধান অংশর একদিক ১৩৪ মিটার টেনে রাখা হবে কেবল দিয়ে। ৬৬ মিটারের বাকি অংশটি অন্য কেবল দিয়ে টেনে রাখা হবে। এবং সাড়ে সাত মিটারের থাকবে ফুটপাত। নতুন ব্রিজ আধুনিক হলেও রেলের আরআরআই কেবিন-এর পাশে ইস্ট ইন্ডিয়া রেলের তৈরি পুরনো ব্রিজ ইতিহাসকে সাক্ষ্য বহন করে চলেছে। কথিত আছে, রাজা নরসিংহ দত্তের কাছ থেকে ইস্ট ইন্ডিয়া রেল জমি লিজ নিয়ে স্থাপন করেছিল এই ইয়ার্ড। ওখানেই মাথা তুলে দাঁড়িয়ে বাঙালবাবুর ব্রিজটি।
প্রবীণ নাগরিকদের কথায়, সেই ßুñল জীবন থেকে আজও দেখে আসছি। বয়স এখন আমার সত্তর। কত স্মৃতি জড়িয়ে। ভবিষ্যতের কথা ভেবে হয়তো নতুন বড় মাপের সেতু তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে নামকরণ করা হোক বাঙালবাবুর নামে। কারণ এই নামের সঙ্গে অনেক ইতিহাস জড়িয়ে রয়েছে। অমৃত ব্যানার্জি নামে এক ব্যাক্তি বলেন, বাঙালবাবুর ব্রিজের ডিজাইন চোখ ধাঁধানো। ব্রিজটির দুধারটা ঢালু হয়ে নেমে গেছে। বিশ্বকর্মা পুজোর সময় অনেকে ওই ঢালে দাঁড়িয়ে ঘুড়ি ওড়াতো। এই ধরনের ব্রিজ কোথাও আর চোখে পড়বে না। আমরা গর্বিত আমাদের শহরে এমন একটি সুদৃশ্য ব্রিজ রয়েছে। কিন্তু তা কতদিন থাকবে এটাই এখন প্রশ্নের। নতুন ঝুলন্ত ব্রিজ উদ্বোধন হলেই ভেঙে ফেলা হবে হাওড়ার ঐতিহ্যের বাঙালবাবুর ব্রিজটি।