শুভেন্দুর দেখানো পথে মন্ত্রিত্ব ছাড়লেন ‘বেসুরো’ রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়
কল্যাণ অধিকারী
হাইলাইটস
❏ ইস্তফা দিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে ঘন্টাখানেক কথাবার্তা বলেন প্রাক্তন বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়
❏ সিদ্ধান্ত নিলে সবাইকে জানাব ডোমজুড়ে দলীয় কার্যালয়ে জানালেন রাজীব
❏ শুভেন্দুর মতো রাজীব গেলেও তৃণমূলের বিশেষ ক্ষতি হবে না মত তৃণমূলের একাংশের
জোর ধাক্কা তৃণমূলে। শুভেন্দুর দেখানো পথে মন্ত্রিত্ব ছাড়লেন ‘বেসুরো’ রাজীব। ইস্তফাপত্র দিলেন মুখ্যমন্ত্রীর কালীঘাটে বাড়িতে। এরপরেই ইস্তফাপত্র তুলে দেন রাজ্যপালের হাতে। তারপর প্রায় একঘন্টা রাজ্যপালের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। ডোমজুড়ে দলীয় কার্যালয়ে দল ছাড়ছেন কিনা এখনই খোলসা করলেন না। সাংবাদিকদের জানালেন সিদ্ধান্ত নিলে সবাইকে জানাব।
মমতার হাত ধরে রাজনীতির পথ চলা শুরু করেছিলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০১১ সালে ডোমজুড় বিধানসভা ভোটে সিপিএমের মন্ত্রী মোহন্ত চট্টোপাধ্যায়কে ২৪ হাজার ৯৮৬ ভোটে পিছনে ফেলে জয়যুক্ত হন রাজীব। তাঁর কাজের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর সুনজরে ছিলেন তিনি। সেচমন্ত্রীর দায়িত্ব দেন মুখ্যমন্ত্রী। এরপর ২০১৬ সালের ডোমজুড় বিধানসভায় জয়ের মার্জিন-এর নিরিখে তৃণমূলের সামনের সারিতে ছিলেন তিনি। কিন্তু আড়াই বছর আগে সেচমন্ত্রী থেকে বদলি করা হয় তাঁকে। মন থেকে মনে নিতে পারেননি রাজীব। এ দিন রাজভবনের বাইরে বেরিয়ে ক্যামেরার সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। সেচমন্ত্রী থেকে সরানো ছিল বড্ড অসৌজন্য। একবার জানানো টুকু হয়নি বললেন তিনি।
এ দিন বনমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে সাংবাদিকদের রাজীব বলেন, “কয়েকদিন ধরে সমস্যায় ছিলাম। মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছিলাম। এই পদক্ষেপ আমাকে নিতেই হত। তিনি আরও বলেন, এই সিদ্ধান্ত আমাকে কষ্ট দিচ্ছে। মন ভেঙে দিয়েছে। তবে এটা করতেই হত। এতগুলি বছর ধরে আমাকে সঠিক পথ দেখানোর জন্য মমতা ব্যানার্জির প্রতি কৃতজ্ঞ। আমি বাংলার মানুষদের জন্য কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দেওয়া ও কান্না নিয়ে অরূপ রায় বলেছেন, “রাজীবের কান্না আসলে নাটক।” রাজ্যপালের সঙ্গে দীর্ঘ সময় আলোচনা নিয়েও অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন। তৃণমূলের একাংশের কথায়, “রাজ্যপালের সঙ্গে কথা বলেই বিজেপি তে যোগ দেবার সেটিং করছেন প্রাক্তন বনমন্ত্রী। চলতি মাসের শেষে বাংলায় আসছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তাঁর বঙ্গ সফরে বিজেপিতে যোগ দিতে চলেছেন তিনি! শুভেন্দুর মতো রাজীব গেলেও তৃণমূলের বিশেষ ক্ষতি হবে না মত তৃণমূলের ওই শিবিরের। তাঁদের যুক্তি দলে থেকে উনি বিরুদ্ধাচরণ করছেন। মানছিলেন না দলীয় শৃঙ্খলা। আসন্ন ভোটে ডোমজুড় বিধানসভা কেন্দ্রের ভোটাররা ওঁকে জবাব দেবে ব্যালটে।”
গ্রাফিক: রাজন্যা নিউজ