গঙ্গাসাগরে ভাঙন রুখতে সমস্ত পদক্ষেপ জলে! ভাঙন রোধে মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রের সঙ্গে কথা বলুক চাইছে সাগরবাসী
কল্যাণ অধিকারী এডিটর রাজন্যা নিউজ
গঙ্গাসাগরে কয়েক বছরে বেড়েছে সমুদ্রের পাড় ভাঙন। কিন্তু কোটালের ভাঙন এ যাবতকালের বড়সড় ভাঙন মনে করছে সাগরবাসী। ভাঙন রোধে অতীতে একাধিক ব্যবস্থা নিয়েছিল সরকার সবটাই জলে গিয়েছে! এমনটা চলতে থাকলে কয়েক বছরেই কপিল মুনির চতুর্থ তথা বর্তমান মন্দিরেও সাগরের জল পৌঁছে যাবে। আতঙ্কের কথাই শুনিয়েছেন দোকানদার, সাধারণ মানুষ থেকে ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের প্রধান নিমাই মহারাজ। ভাঙন রোধে মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাইছে সাগরবাসী।
মঙ্গলবার দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলাশাসক-সহ এক উচ্চপর্যায়ের টিম সাগরে আসছেন পরিদর্শনে। স্থানীয়দের কথায়, সমুদ্রের পাড় ভাঙন একটি বড় সমস্যা গঙ্গাসাগরে। কপিল মুনির আশ্রম থেকে কয়েকশো মিটার দক্ষিণে সাগর তটে পূর্ত দফতরের কংক্রিটের রাস্তা ছিল। পূর্ণিমার কোটালে ওই রাস্তাটির ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে গিয়েছে। ভয়াবহ কাণ্ড দেখে আতঙ্কে রয়েছেন মানুষজন। পুণ্যার্থীরা চাইলেও সাগরে নেমে ডুবকি দিতে পারছেন না। এর আগে সরকার জাপানি মডেলে প্রায় ১৬ কোটি টাকা ব্যয় করে পাইলট প্রোজেক্ট হাতে নিয়েছিল। কিন্তু সবটাই তো জলেই গেল। এমনটা ভাঙন চললে গঙ্গাসাগর মেলা কীভাবে হবে দুশ্চিন্তায় এলাকার মানুষজন। গৌড়হরি মন্ডল, সুমিত গয়রা সহ স্থানীয়রা চাইছে ভাঙন রোধে মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ করুক। উনি প্রয়োজনে কেন্দ্রের সঙ্গেও এই নিয়ে আলোচনা করুক। ইতিমধ্যে সুন্দরবন উন্নয়ন দপ্তরের মন্ত্রী বঙ্কিমচন্দ্র হাজরা দুই নদী ও সমুদ্র বিশেষজ্ঞকে সঙ্গে নিয়ে এলাকা পরিদর্শন করেছেন। মঙ্গলবার সাগর পরিদর্শনে যাবেন রাজ্যের সেচ দফতরের সচিব ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলাশাসক-সহ প্রশাসনিক আধিকারিকরা। সাগরের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করবেন, বৈঠকও হবে সাগরে।
নিমাই মহারাজ বলেন, সাগরে প্রতি বছর লক্ষ-লক্ষ মানুষ আসেন। স্নান সেরে কপিল মুনির মন্দিরে পুজো দিয়ে ফিরে যান। কিন্তু ভাঙন বৃদ্ধি পেয়েছে। সাগরের সাড়ে তিন লক্ষ মানুষকে বাঁচাতে হবে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে রক্ষা করতে হবে। একমাত্র কংক্রিটের বাঁধ সাগরের পাড় ভাঙন রুখতে পারে। তিন কিমি বাঁধ প্রয়োজন।
মন্ত্রী বঙ্কিমচন্দ্র হাজরা বলেন, সাগরে ২ নম্বর থেকে ৫ নম্বর অবধি ভাঙন কবলিত এলাকা দুই নদী ও সমুদ্র বিশেষজ্ঞকে সঙ্গে নিয়ে পরিদর্শন করা হয়েছে। গঙ্গাসাগর বকখালি উন্নয়ন পর্ষদের পক্ষ থেকে সাগরে ১নং থেকে ৫নং অবধি যে সিমেন্টের রাস্তার কাজ করা হয়েছিল সবটাই সমুদ্র টেনে নিয়েছে। নতুনভাবে পাইলিংয়ের কাজ করা হবে। এর আগে গঙ্গাসাগরে ভাঙন রোধে ম্যাকিনটোশ বার্ন কোম্পানিকে দিয়ে সার্ভে করা হয়েছিল। কলকাতা পোর্ট টাস্ট ও চেন্নাই আইআইটিকে দিয়ে। তখন সাগর ৫০০মিটার দূরে ছিল। বাজেট দাঁড়ায় ১৬৭ কোটি টাকা। এই টাকার রাজ্য সরকারের যতটা দেবার সরকার রাজি হয়েছিল। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের কোন সবুজ সংকেত মেলেনি। তাই প্রজেক্টটি পড়েই রয়েছে। তবে আমরা হাল ছাড়ছি না। নদী ও সমুদ্র বিশেষজ্ঞ ডঃ দীপঙ্কর রায়চৌধুরী ও ডঃ বিভাস বর্মনের সঙ্গে কথা বলছি। সাগরের ভাঙন রুখতে কাজ চলবে।