দানা ঘূর্ণিঝড় আতঙ্কে দিনভর শুনশান জাতীয় সড়ক, ট্রেন আমপান স্মৃতি জেলায়

কল্যাণ অধিকারী

ইয়াস, আমপান, রেমাল ঘূর্ণিঝড় দেখেছে রাজ্যবাসী। এবার ঘূর্ণিঝড় দানা আছড়ে পরতে চলেছে। মোকাবিলায় প্রস্তুত প্রশাসন। তবে প্রশাসনকে ভাবাচ্ছে ঝড়ের তান্ডব এবং গুজব। ঘূর্ণিঝড় নিয়ে গুজবে ১৬ নাং জাতীয় সড়ক বৃহস্পতিবার দিনভর কার্যত শুনশান ছিল। গাড়ির সংখ্যাও ছিল কম। ট্রেন ছিল ফাঁকা। বিকেল গড়াতেই হাওড়া স্টেশন, সাঁতরাগাছি, উলুবেড়িয়া, বাগনান সর্বত্র ঘরে ফেরার জন্য মানুষের হুড়োহুড়ি। সন্ধে ৬টার পর মানুষের সংখ্যা ছিল খুবই কম।

ঘূর্ণিঝড় দানার মোকাবিলার জন্য একদিন আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়েছে নবান্ন। গ্রামীণ হাওড়ায় পাঠানো হয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা টিম। নদী তীরবর্তি এলাকার পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে গ্রামবাসীদের কাছে পৌঁছে মাইকিং করা হচ্ছে। নবান্ন থেকে দুর্যোগের মনিটরিং করবেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। রাতভর নবান্নে থেকেই পর্যবেক্ষণ করবেন তিনি। দলের বিধায়ক থেকে মন্ত্রী এলাকা ধরে ধরে তথ্য পাঠাবে এমনটাই জানা যাচ্ছে। শ্যামপুরের বাসিন্দা জলধর পাল, বাকসির জয়ন্ত দিগি প্রত্যেকের কথায়, ঘূর্ণিঝড় নিয়ে আতঙ্কে রয়েছি। নদীর পাড়েই ঘর। নৌকা চালিয়ে মাছ ধরে বিক্রি করে সংসার চলে। সরকারের নির্দেশ মেনে নৌকা শক্ত করে বেঁধে রেখেছি। নদীতে গ্রামের কেউ নামেনি। তবে দুপুর অবধি রূপনারায়ণ স্বাভাবিক রয়েছে। কিন্তু ফণী, ইয়াস, আমপান স্মৃতি কখনো ভুলবার নয়। ওই আতঙ্ক আবারও ফিরে আসছে।

বৃহস্পতিবার বিকেল তিনটের সময় দীঘা থেকে ফিরেছেন সাঁকরাইলের রেয়াজুল হোসেন, উলুবেড়িয়ার রত্না সামন্ত। প্রত্যেকের কথায়, ইচ্ছে ছিল ঝড় দেখবার কিন্তু হোটেল কর্তৃপক্ষ সকাল দশটার সময়েই হোটেল ছাড়বার জন্য জোরাজুরি করা শুরু করে দেয়। বাধ্য হই লোকাল ট্রেন ধরে পাশকুড়া হয়ে ফিরে আসতে। দীঘা যায় সমুদ্রে স্নান করতে। এ যাত্রায় সেই সুযোগ মিলল না। লকডাউনের পর দীঘায় গিয়ে যে বদল দেখলাম তা মনে থাকবে। সাজানো গোছানো সৈকত শহর দেখে ফিরতে মন চাইছিল না।

পরিবেশ কর্মীদের একাংশের কথায়, আয়লা, তিতলি, ফণী, বুলবুল, আমপান একের পর এক ঝড়ে বহু গাছ ভেঙে পড়েছে। এবার দানা ঘূর্ণিঝড় পরিবেশের কতটা ক্ষতি করে ভেবেই মন খারাপ হয়ে যাচ্ছে। চাকরি পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়া বিশাল খামরুই বলেন, গাছে বহু পাখি বাসা বাঁধে। ঝড়ে সেই সমস্ত বাসা ভেঙে বহু পাখির মৃত্যু হয়। এর আগে গাববেড়িয়া বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া এলাকায় আমপান ঝড়ে একাধিক বিশালাকার গাছ ভেঙে প্রচুর পাখির মৃত্যু হয়েছিল। ওই পরিস্থিতি না ঘটলেই মঙ্গল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *