গঙ্গাসাগর মেলায় রেকর্ড ভিড়ের আশায় বুক বাঁধছেন সুমন্ত, অনিল, অশোকরা

কল্যাণ অধিকারী গঙ্গাসাগর থেকে

গঙ্গাসাগর মেলার পূণ্য লগ্নে ভিড় জমছে সাগরে। লট-৮ ঘাটে ভেসেল ধরবার লম্বা ভিড়। ভাটার সময় ভেসেল পরিষেবা সচল থাকায় পুর্ণ্যাথীদের অসুবিধা হচ্ছে না। সমষ্টিপুরের বাসিন্দা মালুতি দেবী সাগরে ডুবকি দেবার পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়েই দু’দিন আগেই পৌঁছে গিয়েছেন। লট এইটে সহজেই ভেসেল পার করেছেন। কচুবেড়িয়া ঘাটে যাত্রীদের নিয়ে যাওয়ার একাধিক গাড়ি অপেক্ষায়। বারুইপুরের সুমন্ত চোংদার বাস নিয়ে এসেছেন সাগরে। এ বছর কুম্ভ মেলা বন্ধ থাকায় ভিড়ের বহর বাড়বে। সেক্ষেত্রে কিছুটা আর্থিক সুবিধা মিলবে। গত বছর সেইমতন যাত্রী হয়নি। এবছর পুষিয়ে যাবে আশা করছেন সুমন্ত।

ডায়মন্ড থেকে শাঁক বিক্রি করবার আসায় সাগরে পসরা সাজিয়েছেন অনিল রীত। বছরভর জরির কাজ করে সংসার চালান। গঙ্গাসাগর মেলার সময় শাঁক নিয়ে আসেন বিক্রি করতে। এ বছর করোনার প্রভাব নেই বললেই চলে। ফলে লাভের আশায় বুক বেঁধেছেন। অনিলের মতোই বারাসাত থেকে স্বামীর সঙ্গে এসেছেন রাজিয়া। মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া লক্ষ্মী ভান্ডার থেকে যা মেলে তা জমিয়ে কারবার বারানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন। সিঁদুর, হাতের বালা, আলতা সাজিয়েছেন। লাভের আশায় ছেলেপুলেদের বাড়িতে রেখে স্বামীর সঙ্গে এই কদিন সাগরে কাটাবেন। কপিলমুনির আশ্রমে পুজো দিয়েই ঘরে ফিরবে জানান রাজিয়া।

মেলা অফিসের সামনে হুঁকো, বটি, কাঠারি নিয়ে বসেছেন হলদিয়ার বাসিন্দা অশোক প্রধান। পুজোর প্রসাদের ডালা সাজিয়ে বসেছেন। গত বছরে করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও কারবার ভালোই চলেছে। মেয়ের বইপত্র কিনে দিয়েছেন, ছেলেকে কম্পিউটারে ভর্তি করেছে। সবটাই বাড়তি উপার্জনের ফল। এবারে যতটা আয় হবে তা দিয়ে বাবা-মাকে নিয়ে অশোক যাবে কেদারনাথ। তবে সবটাই নির্ভর করছে বাবা-মায়ের শারীরিক বিষয়ের উপর। বৃহস্পতিবার থেকেই ভিড় বাড়ছে সাগরে। বিক্রি হবার আশায় বুক বাঁধছেন বিক্রেতারা। একি সঙ্গে জেলার প্রশাসনের আধিকারিকদের সূত্রেও জানা যাচ্ছে ভিড়ের মাত্রা ত্রিশ লাখে পৌঁছাবে! তবে সবটাই নির্ভর করছে কদিনের ওয়েদারের উপর।

বৃহস্পতিবার বিকেলে সাগর তট ঘুরে দেখেছেন পুলিশের উচ্চ পদস্থ আধিকারিকদের একটি টিম। তাতে ছিলেন ডিএম, এসডিপিও, এসপি সহ অন্যান্য আধিকারিক। জলস্তর বেড়ে যাওয়ার কারণে পাড়ের গায়ে জল।.সেই সঙ্গে ভিড় নজরে রাখতে তীক্ষ্ণ নজর পুলিশ কর্তাদের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *