বাম-কংগ্রেসের মিলিত ব্রিগেড হয়ে উঠল আব্বাসময়!

কল্যাণ অধিকারী, কলকাতা

হাইলাইটস
বাম-কংগ্রেসের ব্রিগেডে নীল-সাদা-সবুজ পতাকা
হাওয়া পালে টানতে ব্রিগেড মঞ্চকেই বেছে নিলেন আব্বাস
তিরিশ নয় ৭০ থেকে ৮০ টি আসনের দাবি জানাতে চলেছেন আব্বাস

একুশের নির্বাচনের মুখে প্রথম ব্রিগেড জনসভা ডেকে শক্তি প্রদর্শনের চেষ্টায় সফল বাম-কংগ্রেস। কিন্তু দিনের শেষে সমস্ত আলো নিজেদের দিকে নিয়ে ঘরে ফিরল ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্ট প্রধান আব্বাস সিদ্দিকি। ফলতঃ রাজ্য কংগ্রেসের সভাপতি অধীর চৌধুরী ‘নাখুশ’। ‘কাঁচুমাচু’ দেখাল বামেদেরও!

বামেদের সঙ্গে কংগ্রেসের সমঝোতা প্রায় পাকা। আব্বাস কে নিয়ে তাঁদের পথ চলতে অসুবিধা নেই এমনটাই বলে আসছেন রাজ্যের বাম-কংগ্রেস নেতারা। কিন্তু ব্রিগেড উল্টো কথাই শোনাল। এ দিন বিজেপি ও তৃণমূলকে এক আসনে বসিয়ে যখন তুলোধনা করছেন বাম-কংগ্রেস নেতারা, সেই সময় হাওয়া পালে টানতে ব্রিগেড মঞ্চকেই বেছে নিলেন আব্বাস। গত কয়েক দশকে বামপন্থীদের একাধিক জনসভার সাক্ষী থেকেছে ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ড। কিন্তু এ দিন নীল-সাদা-সবুজ পতাকা অন্য সুর গেয়ে দিল। ব্রিগেডের লক্ষ লক্ষ মানুষের সামনে সম্ভাব্য জোট শরিকদের প্রতি রীতিমতো তোপ দাগলেন। তিনি যে আসন বন্টন নিয়ে কোন আপসে যাবেন না। তিরিশ নয় ৭০ থেকে ৮০ টি আসনের দাবি জানাতে চলেছেন আব্বাস তাও বুঝিয়ে দিলেন তিনি।

আব্বাস মঞ্চের কাছে পৌঁছতেই আব্বাস-আব্বাস চিৎকার ব্রিগেড জুড়ে। ভাইজান এসে গিয়েছে বলেও আওয়াজ উঠতে থাকে। প্রখর রোদে এমন চিৎকার শুনে বক্তব্যের মাঝেই থমকে যান খোদ অধীর রঞ্জন চৌধুরী। আব্বাসকে স্বাগত জানাতে বাম নেতাদের উৎসাহ ছিল যথেষ্ট। কিন্তু কংগ্রেসে কাছে আব্বাস কে নিয়ে সত্যিকারের ঐক্য নৈব নৈবচ তা বারেবারে অধীর বাবুর দূরত্ব বুঝিয়ে দিয়েছে। বিষয়টি যে এড়িয়ে যায়নি বক্তব্যে কংগ্রেস কে এড়িয়ে যাওয়াতেই তা স্পষ্ট। কর্মীদের ভোটের লড়াইয়ে কীভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে বুঝিয়ে দিচ্ছেন। বাম নেতৃত্বর প্রতি বিভিন্ন মন্তব্য করেছেন। কিন্তু কংগ্রেস যে আব্বাসকে মালদহ, মুর্শিদাবাদে জমি দেবে না বুঝতে অসুবিধা হয়নি। তিরিশটি আসনে সমঝোতা হলেও বাড়তি আসনের বিষয়টি ভাসিয়ে দিয়েছেন তিনি। একি সঙ্গে বেশি আসন না পেলে জোট থেকে বেরিয়ে যেতেও পিছপা হবেন না বুঝিয়ে দিয়েছেন জোট শিবিরের তিন সেনাপতি বিমান বসু ও সূর্যকান্ত মিশ্র এবং অধীর চৌধুরীর সামনে।

‘সংযুক্ত মোর্চা’ নামে বিধানসভা ভোটের ময়দানে নামতে চলেছে বাম-কংগ্রেস এবং আইএসএফ মিলিত বিরোধী জোট। নন্দীগ্রাম আসনটি আব্বাসকে ছাড়া হচ্ছে। কিন্তু অধীরের বঙ্গ বলে পরিচিত মালদহ, মুর্শিদাবাদে কি হবে প্রশ্ন উঠছে। এ বিষয় আলোচনা হবে আলিমুদ্দিন অফিসে। কিন্তু ব্রিগেড অন্য কথা বলে গেল। বিধানসভা নির্বাচনের মুখে লাখো মানুষের উপস্থিতি খুশি করেছে মঞ্চে থাকা সীতারাম ইয়েচুরি সহ দেশের তাবড় নেতাদের। ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্ট প্রধানের উপস্থিতির কারণে ভিড় হয়েছে আড়ালে-আবডালে মেনে নিচ্ছেন বিমান বসুরা! এরপর আব্বাস আসন সমঝোতায় নিয়ে এক দফা ফরমান জারি করতে পারেন নিশ্চিত বাম-কংগ্রেস নেতারা। এ কারণেই আব্বাস কে মালদহ, মুর্শিদাবাদ জেলায় আসন ছাড়া হবে না বুঝিয়ে দিয়েছে কংগ্রেস। বিষয়টি কয়েকদিনের মধ্যেই স্পষ্ট হতে চলেছে।

গ্রাফিক রাজন্যা নিউজ। ছবি সোশ্যাল মিডিয়া।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *