KBC 15: মালবাজারের মেয়ে মন জয় করল কেবিসি’র
কল্যাণ অধিকারী এডিটর রাজন্যা নিউজ
ডুয়ার্সের অন্তর্গত যেক’টি জায়গা আমার বরাবরের পছন্দের তারমধ্যে অন্যতম মালবাজার। ঘন জঙ্গল, মায়াবী এক পরিবেশ দেখতেই মূলত ডুয়ার্সে যাওয়া। প্রকৃতি এখানে সর্বদা অপরূপ রুপে ধরা দেয়। মালবাজার স্টেশন থেকেই যাওয়া যায় লাল-ঝামেলা গ্রামে। শান্ত নিরিবিলি গ্রামের গা লাগোয়া চেংড়ামারী চা বাগান। মন ভালো করে দেওয়া দৃশ্যপট। এমন চা বাগান আমার বড্ড প্রিয়।
মালবাজারের কথা আজ বলার উদ্দেশ্য অন্য। ক’দিন আগেই গিয়েছি ডুয়ার্স। ঘুরেছি বিস্তৃত এলাকা। মালবাজার স্টেশনে ট্রেন থেকে কিছুটা সময়ের জন্য নেমেছিলাম। কিন্তু তখন জানতাম না এখানকার মেয়ে ভারতজুড়ে নাম করবে। এখানকার সহজ সরল মেয়েটি কেবিসির মঞ্চে ‘জয় কেবিসি’ বলেই মাতিয়ে দেবে। জিতেছে ১২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। ২০০৫ থেকে চলা অধ্যাবসায় ওঁকে এহেন সাফল্য এনে দিয়েছে।
অলোলিকা ভট্টাচার্য গুহ। বাড়ি মালবাজারে। জলপাইগুড়ি এসি কলেজ থেকে জুওলজি অনার্স নিয়ে পাস করেছেন। বর্তমানে কলকাতায় স্বামীর সঙ্গে চুটিয়ে ঘর-সংসার করছেন। রয়েছে ছোট্ট এক পুত্র সন্তান। কিন্তু অসম জেদ তাঁকে কখনো পিছিয়ে দিতে পারেনি। দীর্ঘ আঠারো বছর ধরে চলা লড়াইয়ের জেরে কেবিসির মঞ্চে অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে জমিয়ে খেলেছেন। তাঁর সাদামাঠা কথায় বারবার হাসির রোল উঠেছে। সেই ভিডিও এখন ভাইরাল।
ভিডিওতে বলতে শোনা গেছে, বিমানে চড়লে ওরাই লাগেজ গুছিয়ে নিয়ে যায়। আর ট্রেনে যাত্রা করবার সময় বারেবারে মাথা ঝুঁকিয়ে সিটের নিচে দেখতে হয় ‘লাগেজ রয়েছে তো’! রাতে ঘুমের মধ্যেই মাথা ঝুঁকিয়ে দেখে নিতে হয় ‘লাগেজ ঠিকঠাক আছে তো’! ওঁর এমন সহজ সরল কথাবার্তা মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। মালবাজারের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের প্রমোদনগর কলোনি জুড়ে এখন খুশির হাওয়া বইছে।
উত্তরবঙ্গের মালবাজার, লাটাগুড়ি, জলপাইগুড়ি, জলদাপাড়া, হোলং, মাদারিহাট, গোরুমারা, সামসিং জয়ন্তী পর্যটকদের কাছে সর্বদা পছন্দের। তাঁদের পছন্দের স্থানের এক বাঙালি মেয়ে তথা কলকাতার গৃহবধূ কেবিসি মঞ্চ মাতালেন। অমিতাভজির সামনে হটসিটে বসে তাঁর প্রাপ্তি সাড়ে ১২ লক্ষ টাকা। এই টাকা দিয়ে সন্তানের ভবিষ্যতের পড়াশোনা এবং মা-বাবার জন্য বাড়ি তৈরি করবেন। এর পাশাপাশি ভাইকে সাহায্য করতে চান অলোলিকা।
পাহাড় ও জঙ্গল এবং ঝর্ণায় ঘেরা ডুয়ার্সে গেলে হোমস্টেতে ম্যাগি ও স্যুপ খাবার পাশাপাশি ঢুঁ মেরে আসবেন মালবাজারের প্রমোদনগর কলোনি। অলোলিকার পাড়ার লোকজনের সঙ্গে গল্প করবেন। শুনবেন ওখানকার মানুষের জীবন জীবিকার কথা। দেখে আসবেন কতো অলোলিকা কিবিসি কাঁপানোর স্বপ্নে বিভোর!