মন্ত্রী পুলক রায় পরিদর্শনে, কুলিয়ায় পাকা সেতু নির্মাণে জাগছে দ্বীপাঞ্চলের স্বপ্ন

কল্যাণ অধিকারী, এডিটর রাজন্যা নিউজ

কুলিয়া ঘাটে বাঁশের সেতুতে দাঁড়িয়ে বহু ভোট প্রচার ও প্রতিশ্রুতি দেখেছে দ্বীপাঞ্চলের হাজারো বাসিন্দা। তারপরও সেতু নির্মাণ সেই তিমিরেই থেকে গিয়েছে। মা মাটি মানুষের সরকার গঠনের পর জয়পুরের কুলিয়া ঘাটে কুলিয়া সেতু নির্মাণ নিয়ে অনেকটাই এগিয়েছে সরকার। গত বছর বিধানসভায় মন্ত্রী মলয় ঘটকের কাছে দ্রুত নির্মাণ নিয়ে কথা বলেছিলেন বিধায়ক সুকান্ত পাল। শনিবার কুলিয়া ঘাটে প্রস্তাবিত সেতু নির্মাণে এলাকা পরিদর্শনে রাজ্যের পূর্ত ও জনস্বাস্থ্য দপ্তরের মন্ত্রী পুলক রায়। মন্ত্রী পরিদর্শনে আসতেই সেতু নির্মাণ নিয়ে পুনরায় স্বপ্ন দেখা শুরু করছে দ্বীপাঞ্চলের হাজার-হাজার বাসিন্দা।

কুলিয়ায় পাকা সেতু নির্মাণ হলে গাড়িতে করেই মুন্ডেশ্বরী নদী পেরিয়ে সহজে ঢুকে পড়া যাবে ভাটোরা এবং ঘোড়াবেড়িয়া-চিতনানের দিকে। একি সঙ্গে দ্বীপাঞ্চলে সরকারি চিকিৎসা কেন্দ্রে কলকাতার ডাক্তাররা সরাসরি পৌঁছে যাবেন। এলাকার চিকিৎসা ক্ষেত্রে বদল আসবে। বাঁশের সেতু দিয়ে অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে যাতায়াত করা অত্যন্ত কঠিন। তারপর বছরে অন্তত দুবার বন্যায় ও জলের তোড়ে ভেসে যায় বাঁশের সেতু। ফলে সেইসময় প্রধান বাহন হয়ে ওঠে নৌকা। মন্ত্রী পুলক রায় এদিন পরিদর্শণে আসবেন এ খবর একদিন আগে থেকেই জানাজানি হয়ে গিয়েছিল। স্থানীয় বাসিন্দারা খটখটে রোদের মধ্যেও নদীর পাড়ে এসেছিলেন। সেতু নির্মাণ নিয়ে নতুন সূর্য দেখতে পাচ্ছেন তাঁরা। রূপনারায়ণ, মুণ্ডেশ্বরী, হুড়হুড়িয়া ও গাইঘাটা খাল দিয়ে ঘেরা দ্বীপাঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটবে। সরকার অনেক কাজ করেছে তবে প্রকৃত উন্নয়ন সেদিন হবে যেদিন পতাকা নেড়ে সেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হবে, এমনটাই মত বাসিন্দাদের।

বেলা এগারোটা নাগাদ কুলিয়ায় পৌঁছে যান মন্ত্রী পুলক রায়ের কনভয়। তার আগেই পৌঁছে যান বিধায়ক সুকান্ত পাল, এসডিও, আমতা-২ ব্লক সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক সৈয়দ মাসুদুর রহমান, আমতা-২ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি দেলোয়ার হুসেন মিদ্যা, ঘোড়াবেড়িয়া চিতনান গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান সাবিনা বেগম সহ অনেকেই। প্রায় সাড়ে পাঁচশো ফুট লম্বা বাঁশের সেতুর পাশেই গড়ে উঠবে প্রস্তাবিত সেতু ও সেতু সংলগ্ন রাস্তা। আধ ঘন্টা ধরে প্রস্তাবিত সেতু এলাকা পরিদর্শণ করেন মন্ত্রী। বিধায়কের সঙ্গে কথা বলেন। স্থানীয় মানুষজন ও আধিকারিক এবং পূর্ত দপ্তরের ইঞ্জিনয়রদের সঙ্গেও আলোচনা সারেন তিনি। জানা যাচ্ছে ১৫০ মিটার সেতু নির্মাণ ও সেতুর সংযোগকারী দু’দিকের অ্যাপ্রোচ রোড নির্মাণ সহ মোট খরচ পড়ছে সাড়ে ২২ কোটি টাকা।

চলতি বছরেই কাজ শুরুর আশ্বাস দিয়েছেন মন্ত্রী পুলক রায়। কুলিয়া সেতু তিনি নির্মাণ করে ভাটোরা ও ঘোড়াবেড়িয়া চিৎনান এই দুটি গ্রাম পঞ্চায়েতে বসবাসকারী ৫০-৬০ হাজার মানুষকে জেলার সঙ্গে জুড়বেন। দ্বীপাঞ্চলের বাসিন্দাদের কয়েক দশকের স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করবেন। আমতার বিধায়ক সুকান্ত পাল জানিয়েছেন, কুলিয়া সেতু নির্মাণে জমির জন্য ইতিমধ্যে ৫টি পরিবারকে চেক দেওয়া হয়েছে। বাকিদের চেক দেওয়ার কাজ চলছে দ্রুত সম্পূর্ণ করা হবে।    

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *