জমে থাকা দূষিত জল থেকে ছড়াচ্ছে গন্ধ, ত্বকের সংক্রমণ পাড়ায়-পাড়ায় চিকিৎসক, আশা দিদিরা
কল্যাণ অধিকারী, এডিটর রাজন্যা নিউজ
পিচ রাস্তার ধারে মাদুর পেতে আশা দিদিরা। কোথাও আবার চেয়ার-টেবিলে বসে। জলমগ্ন গ্রামের রাস্তা পার করে গ্রামের মানুষজন আসছেন ওষুধ আনতে। এ দৃশ্য দেখা গেল আমতা-২ ব্লকের জয়পুর থানার তেলিবেড়িয়া সহ একাধিক জলে ডোবা গ্রামে।
জয়পুর পুরনো হসপিটাল মোড় থেকে কাশমলি পুরো রাস্তাটাই জেগে উঠেছে। কিন্তু গ্রামের ঢালাই রাস্তায় এখনও জল। নিচু এলাকার বাড়িঘরের সামনে জল। ডুবে রয়েছে পুকুর, কৃষিজ জমি। নিকাশি খাল দিয়ে জল নামলেও গতি নেই। তার উপর জোয়ারের জল উঠে আসছে। ফলে এলাকার জল এখনো জমে রয়েছে। জল পার করে সাধারণ মানুষ যাতায়াত করছেন। এতে করে হাজা জাতীয় জলবাহিত চর্মরোগ রোগ হচ্ছে। পানীয়জলের কল জেগে উঠলেও জলবাহিত রোগের কথা ভেবে অনেকেই জল নিচ্ছেন না। উঁচু এলাকার কল থেকে পানীয়জল এনে খাচ্ছেন। খবর পৌঁছেছে আমতা-২ ব্লক স্বাস্থ্য দফতরে। দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন করেছেন ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক। ইতিমধ্যে গ্রামে পাঠানো হয়েছে চিকিৎসক, আশা কর্মী, এন.এইচ.এমদের।
ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক অনিন্দ্য সিকদার জানান, “জলবাহিত রোগ এখনও দেখা দেয়নি। তবে প্লাবিত এলাকার মানুষদের চিকিৎসার বিষয় কোন খামতি রাখা হয়নি। প্রতিদিন বারোটা করে শিবির হচ্ছে। চিকিৎসক, আশা কর্মী, এন.এইচ.এম’রা পৌঁছে যাচ্ছেন। গ্রামবাসীদের হাজা জাতীয় উপসর্গ দেখা দিলেও জলবাহিত রোগ এখনও হয়নি। এর আগে দ্বীপাঞ্চলে বন্যার সময় স্প্রিড বোর্ডে করে চিকিৎসক টিম পৌঁছেছে। ডেপুটি সিএমওএইচ-২ ডঃ সিভাশিস দাস, মেডিক্যাল অফিসার ডঃ আবিস্কার রায় উপস্থিত থেকে সমস্তটা পরিচালনা করেছেন। স্পিড বোডে বসেই চিকিৎসা করেন বন্যার্তদের।”
অন্যদিকে, সেহাগোড়ি এলাকায় একাধিক গ্রামে জল। দশ দিন হতে চলল জলে ডুবে এলাকা। কবে জল নামবে বুঝতে পারছে না গ্রামবাসীরা। পচা জলে গন্ধ ছড়াচ্ছে এলাকায়। সাধারণ মানুষদের দুর্দশার শেষ নেই। এলাকার বাসিন্দাদের একাংশের কথায়, ‘খাল কেটে কুমির আনার মতন অবস্থা। সেহাগোড়ী-বাকসি ক্যানেল কাটা হতে আশায় ছিলাম বন্যা হবে না। এতো হিতে বিপরীত! উদয়নারায়ণপুরে বন্যা হলে জল নেমে আসে সেহাগোড়ী অবধি। ক্যানেলের জল কমলে লকগেট খোলা হয়। তারপর জল নামে। এতে করে গ্রামে প্রায় মাসখানেক জল থাকে। একি দৃশ্য এ বারের বন্যাতেও। কয়েক হাজার বিঘা জমির ধান নষ্ট হয়েছে। ডাঙ্গার সবজি পচে গিয়েছে। সরকার আমাদের কথা ভাবুক’।