শিক্ষকের লড়াইয়েও বাঁচানো গেল না, বাথরুমে ঢুকে পরা সাপকে পিটিয়ে মারল স্থানীয়রা

কল্যাণ অধিকারী, এডিটর রাজন্যা নিউজ

প্রথমে কোচ দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে মারা হয়। তাতেও না-মরায় লাঠি দিয়ে পিটিয়ে একটি পাঁচ ফুট লম্বা খরিস সাপ মারল স্থানীয়রা। নৃশংস ঘটনা ঘটল গ্রামীণ হাওড়ার ঝিকিরায়। ঘটনার প্রতিবাদ করলেন একজন শিক্ষক। কিন্তু একত্রিত মানুষজনের কাছে তাঁর প্রতিবাদ ধোপে টেকেনি। সাপ বাঁচাতে হবে নইলে অচিরে হারিয়ে যাবে সর্পকুলের একটা বড় অংশ, মত ওই শিক্ষকের।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঝিকিরা গ্রামে নারায়ণী স্কুলের কাছে এক ব্যাক্তির বাড়ির বাথরুমে একটি খরিস সাপ ঢুকে পড়ে। কখনও টিনের চালে আবার কখনও সাদা চুনকাম করা দেওয়ালে ঘোরাঘুরি করতে থাকে। ভয়ে আড়ষ্ট পরিবারের লোকজন। ছুটে আসেন আশপাশের বাড়ির লোকজন। কানাকানি খবর পৌঁছায় এলাকার শিক্ষক নভেন্দু অধিকারীর কাছেও। সাপটিকে রক্ষা করতে বন দফতরের নম্বর জোগাড় করতে শুরু করেন তিনি। কিন্তু বন দফতরের কোনপ্রকার সাড়া না পেয়ে নিজেই পৌছে যান ওই বাড়িতে। ততক্ষণে সাপটিকে মারতে উদ্যত এলাকার মানুষজন। বিষয়টি উলুবেড়িয়া বন দফতরে জানানো হয়। কিন্তু উল্লেখযোগ্য সাড়া মেলেনি। যদি কাউকে কামড়ে দেয় তার দায় কে নেবে এমনি সব প্রশ্নের মুখোমুখি তখন শিক্ষক। একপ্রকার তাঁকে হঠিয়ে দেওয়া হয়। এরপরেই পিটিয়ে মেরে ফেলা হয় সাপটিকে। এলাকার বাসিন্দাদের একাংশের বক্তব্য দীর্ঘসময় অপেক্ষার পরেও আসেননি বন দফতরের কোন আধিকারিক। কোনভাবে সাপটি কামড়ে দিলে মানুষের প্রাণ সংশয়ের ব্যাপার চলে আসতো।  

শিক্ষক নভেন্দু বাবু জানান, “সাপটির কথা জানতে পেরেই বন দফতরের নম্বরে ফোন করি। বলা হয় ওটা তাঁর এলাকার মধ্যে পরে না। খবর দেওয়া হয় উলুবেড়িয়া বন দফতরে। প্রায় তিন ঘন্টা পরেও কোন প্রকার আশানুরূপ সাহায্য মেলেনি। অতিষ্ঠ হয়ে পড়েন এলাকার মানুষজন। তাঁদের মূল ধারণা ছিল যদি কোনভাবে সাপটি কাউকে কামড় দেয় কি হবে তখন! ধৈর্যের বাঁধ ভেঙ্গে মেরেই ফেলা হয় সাপটিকে। বিষধর সাপ রক্ষায় সচেতনতার প্রচার প্রয়োজন। নইলে বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে আশঙ্কা করছেন তিনি।”

পরিবেশ কর্মী প্রদীপ রঞ্জন রীত একাধিক সাপ রক্ষা করেছেন। তিনি জানান, “এ ভাবে সাপ মেরে ফেলা হলে তার প্রভাব অবশ্যই পড়বে। প্রয়োজনে ওই এলাকায় সচেতনতার প্রচারে যাওয়া হবে। এলাকার মানুষকে বোঝানো হবে সাপ না মেরে বন দফতরে খবর দিন। দূর থেকে আসতে সময় লাগলেও ধৈর্য রাখতে হবে।” এ বিষয় উলুবেড়িয়ার রেঞ্জ অফিসার রাজেশ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও যোগাযোগ সম্ভব হয়নি। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *