পুরভোটে তৃণমূল ঝড়ে হতশ্রী, ছন্নছাড়া বিরোধী শিবির

কল্যাণ অধিকারী

বিধাননগর, আসানসোল, চন্দননগর ও শিলিগুড়ি চার পুরসভা ভোটে বিপুল ব্যবধানে জয় পেল তৃণমূল। শহরকেন্দ্রিক ছাড়াও উত্তরবঙ্গে বিজেপির শক্ত ঘাঁটিতে আঘাত হেনেছে রাজ্যের শাসকদল। বামেদের হাতে থাকা শিলিগুড়ি পুরসভায় তৃণমূলের জয় জয়কার। নেত্রী স্বয়ং জানিয়েছেন শিলিগুড়িতে জয়ে তৃপ্ত তিনি।

৪১টি ওয়ার্ডের বিধাননগর পুরসভা। সেখানে তৃণমূলের ঝুলিতে ৩৯ টি আসন। উল্লেখযোগ্য বিষয় বাম-বিজেপি শূন্য। কংগ্রেস এবং নির্দল একটি করে সিট পেয়েছে। শেষ বার পুরভোটে এখানে তৃণমূল পেয়েছিল ৩৭টি এবং বাম ও কংগ্রেস দুটি করে সিট পায়।
১০৬টি ওয়ার্ড বিশিষ্ট আসানসোল পুরসভা। এখানে তৃণমূল পেয়েছে ৯১টি, বিজেপি ৭টি এবং বামফ্রন্ট ২টি ও কংগ্রেস ৩টি এবং অন্যান্য ৩টি সিট পেয়েছে। ২০১৫ সালের থেকেও সিট বাড়িয়েছে রাজ্যের শাসকদল। সেবার তৃণমূল পেয়েছিল ৭৪, বামফ্রন্ট ১৭ এবং বিজেপি ৮, কংগ্রেস ৩টি এবং অন্যান্য পেয়েছিল চারটি সিট।

অন্যদিকে ৩৩টি সিটের চন্দনগর পুরসভায় তৃণমূল পেয়েছে ৩১টি। বামফ্রন্ট ১টি। বিজেপি ও কংগ্রেস খাতা খুলতে পারেনি। ২০১৫ সালে তৃণমূল পায় ২১টি। বামফ্রন্ট ৮ এবং বিজেপি ১ ও অন্যান্য ৩।

চার পুরসভার ভোটে রাজ্যের নজর ছিল শিলিগুড়ির দিকে। ৪৭টি সিটের এই পুরসভায় বামেদের বরাবর প্রাধান্য দেখা দিয়েছে। কিন্তু সোমবার ঝাঁপি খুলতেই উল্টো চিত্র। বামেদের ২৩ থেকে নেমে চারটি সিট মিলেছে। অন্যদিকে বিজেপি ২ এবং অন্যান্য ১। তৃণমূল ১৭ থেকে বাড়িয়ে ৩৭ টি সিট পেয়েছে। ফলে এককভাবে শিলিগুড়ি পুর বোর্ড গড়ছে তৃণমূল। ১৯৯৪-এ শিলিগুড়ি পুরনিগম গঠন হয়। তারপর থেকে এই প্রথমবার ক্ষমতায় এল তৃণমূল। বিধানসভায় নিজে জিততে না পারলেও পুরভোটে দলকে জয় এনে দিয়েছেন তৃণমূলের প্রাক্তন মন্ত্রী গৌতম দেব। নেত্রী তাঁকে এ দিনই বড় পুরস্কার দিয়েছেন। শিলিগুড়ির মেয়র হচ্ছেন গৌতম দেব এমনটাই জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

সব থেকে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় শিলিগুড়ি পুরনিগমে সিপিএম-এর অন্যতম প্রার্থী ছিলেন অশোক ভট্টাচার্য। ফল ঘোষণা হতে দেখা যায় তিনিই পরাজিত হয়েছেন। শিলিগুড়ির ৬ নম্বর ওয়ার্ড থেকে হেরে গিয়েছেন অশোক ভট্টাচার্য। ফলে চার পুরসভা ভোটে বিরোধীদের হাতে কিছুই থাকল না। হতাশা ছেয়েছে কর্মীদের চোখে মুখে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *