প্রতি বাড়িতে একজন রক্তদাতা! রক্তদানে আশার আলো দেখাচ্ছে ভোজান গ্রাম
কল্যাণ অধিকারী এডিটর রাজন্যা নিউজ
হাওড়া জেলার আমতা-১ ব্লকের ভোজান গ্রাম। দামোদর নদের পাড় ঘেঁষা গ্রামের প্রায় প্রতিটি বাড়িতে একজন রক্তদাতা বাস করেন। ঝড়ঝঞ্জা বাধা হতে পারেনি। দিন-রাত এক করে নিজেদের শরীরে রক্ত দিয়ে অন্যের জীবন বাঁচিয়ে তুলতে বদ্ধপরিকর বাসিন্দারা। গ্রীষ্মকালীন রক্তের সংকট মেটাতে গ্রামের ৩৭জন যুবক-যুবতী রক্তদান করলেন। একিসঙ্গে মরণোত্তর চক্ষুদান ক্ষেত্রেও অঙ্গীকারবদ্ধ ওঁরা।
আমতা-খিলা গ্রাম্য সড়কের ধারে ভোজান গ্রাম। নদীর পাড়ে রাস্তার গায়ে গ্রামের যুবকরা গড়ে তুলেছে ‘সেবায়ন কিশোর বাহিনী’। গ্রামীণ এলাকার কোথাও কোন গ্রামবাসীর রক্তের প্রয়োজন পড়লে সেবায়ন কিশোর বাহিনী’র যুবকদের ডাক পড়ে। উলুবেড়িয়া হাসপাতাল হোক বা কলকাতার মেডিক্যাল কলেজ বাইক নিয়ে পৌঁছে যায়। এভাবেই ক্রমাগত রক্তদান করছেন যুবক-যুবতীরা। ক্লাবের কার্যকরী সমিতির সক্রিয় সদস্য মিলন দে, টিঙ্কু সী, টোটন, রাকেশ, সৌমেন দে প্রত্যেকের কথায়, উলুবেড়িয়া হাসপাতালে সবচেয়ে বেশি রক্ত দেওয়ার সুনাম রয়েছে আমাদের গ্রামের। কোভিড পরিস্থিতির সময়ও রক্ত দিতে ছুটে গিয়েছি হাসপাতালে। এবার আমাদের লক্ষ্য গ্রামীণ এলাকার জন্য ল্যাব গঠনের। ইসিজি, রক্ত পরীক্ষার মতো বিষয়গুলো বিনামূল্যে করতে চাই।
বৃহস্পতিবার ভোজান গ্রামে সেবায়নের সামনে অপেক্ষায় গ্রামের দুই যুবতী সহ চারজন। উলুবেড়িয়া রোগীর পরিবারের লোকজন উপস্থিত রয়েছেন। রক্তদান করতে যাবেন। ক’দিন আগেই রক্তদান করে এসেছেন রিতা দে, মঞ্জু, অনিতা পাল, সুস্হমেলী চোংদার, তানিয়া পাখিরা, প্রিয়াঙ্কা পাল দে সহ অনেকেই। হাওড়া জেলার বিশিষ্ট রক্তেযোদ্ধা ও সমাজসেবী রেজাউল করিম ওঁদের প্রতিটি পদক্ষেপকে সম্মান জানিয়ে এসেছে।
কিশোর বাহিনীর অন্যতম সদস্য সুমন রাজা দে বলেন, “বছরভর রক্তদানে আমরা ব্রত। থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত কোন বাচ্চা রক্তের অভাবে কষ্ট না পায়। ঠিক তেমনি কোন মানুষের রক্তের প্রয়োজন পড়লে একটা ফোন করলেই আমরা প্রত্যেকে প্রস্তুত। রনি কাঁড়ার, সৌরভ খামরুই, মনোজ দলুই, শঙ্কর মালিক, দীপ দে, মনোজিৎ, কুশল ঘোষ, প্রদ্যুৎ ধাড়া, আশীষ দে, বিক্রম দে সহ মোট ৪০-৫০ জন যুবক যুবতী রক্তদানে অঙ্গীকারবদ্ধ। একি সঙ্গে চক্ষুদান সহ বিভিন্ন সামাজিক কাজে আমরা লাগাতার প্রচার চালাচ্ছি।